PMAY

‘কাল কী খাব জানি না, আমাদের আবার পুজো’

আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছিল প্রশাসন। সে সময়ে পাঁচ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ পান তারকনাথ। কিন্তু সেই টাকায় সংসারে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার পরে বাড়ি সারানো আর হয়ে ওঠেনি।

Advertisement

নির্মল বসু 

হিঙ্গলগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৩ ০৬:২৪
Share:

আবাস যোজনার ঘরের অপেক্ষায় হিঙ্গলগঞ্জের এই বাসিন্দা।

আমপানে ঘর ভেঙেছিল। তারপর থেকে মাটির দেওয়ালে কোনও রকমে ত্রিপলের ছাউনি দিয়েই চলছে বসবাস। হিঙ্গলগঞ্জের নারকেলতলা এলাকার বাসিন্দা তারকনাথ মণ্ডল আবাস যোজনায় বাড়ির আবেদন করেছিলেন। কিন্তু অভিযোগ, এত বছরেও সেই ঘর মেলেনি। তারকনাথ জানান, বর্তমানে দু’বেলা দু’মুঠো ভাত জোগাড় করতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে। বাড়ি সারানোর সামর্থ্য নেই। খাবার জোগাড় হবে কী ভাবে, সেই ভাবনায় ফিকে হয়ে গিয়েছে পুজোর আনন্দও।

Advertisement

আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছিল প্রশাসন। সে সময়ে পাঁচ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ পান তারকনাথ। কিন্তু সেই টাকায় সংসারে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার পরে বাড়ি সারানো আর হয়ে ওঠেনি। ভাঙা বাড়ি কোনও রকমে দাঁড় করিয়ে চলছে। এলাকার বহু মানুষ ভিন্ রাজ্যে কাজে চলে গিয়েছেন। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার জন্য যেতে পারেননি তারকনাথ।

এলাকায় দু’শো টাকার দিনমজুরি করে কোনও রকমে সংসার চলে। এর মধ্যেই বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। বছর চোদ্দোর ছোট মেয়ে পড়াশোনা করে। মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে ভাঙা বাড়িতেই কোনও রকমে কাটে দিন। পুজোর আনন্দ সে ভাবে প্রভাব ফেলতে পারেনি তারকনাথের পরিবারে। তারকনাথ বলেন, “আমপানে বাড়িঘর ভেঙে যাওয়ার পরে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা পেয়েছিলাম। তা থেকে দু’হাজার টাকা স্থানীয় নেতাদের হাতে তুলে দিতে হয়েছিল। তিন হাজার টাকা দিয়ে রান্নাবান্নার জন্য হাঁড়ি, কড়া ও সংসারের অন্যান্য জিনিসপত্র কিনি। আর কোনও সরকারি সাহায্য মেলেনি। আবাস যোজনায় নাম থাকলেও টাকা পাইনি। দিনমজুরির কাজও রোজ মেলে না। এ ভাবেই চলছে।”

Advertisement

তারকনাথের স্ত্রী সবিতার কথায়, “দু’বেলা দু’মুঠো পেট ভরে খেতে পারি না। পর দিন সকালে কী খাব তা ভেবে রাতে ঘুম আসে না। তার উপরে মাথা গোঁজার জায়গার এই অবস্থা। রোজগার যা হয়, ওষুধ কিনতেই চলে যায়। কোনও রকমে রেশনের চালটুকু ফুটিয়ে খেয়ে বেঁচে আছি। আমাদের আবার পুজো!” কেন ঘর পেলেন না তারকনাথ? সরকারি সাহায্যই বা সে ভাবে নেই কেন? স্থানীয় প্রশাসনের তরফে এ ব্যাপারে কেউ মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন