বাঁধ কেটে জল ঢোকানো হচ্ছে মেছোভেড়িতে

চওড়া ও উঁচু নদীবাঁধ আগে ঢাকা ছিল ম্যানগ্রোভের সবুজ জঙ্গলে। কিন্তু বছর দশেক আগে নদী বাঁধের পাশে তৈরি হয় মাছের ভেড়ি। তার পরেই শুরু হয়েছে গোলযোগ। দিন দিন কমতে থাকে সবুজের পরিমাণ। ক্ষতি হচ্ছে নদীবাঁধের।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

রায়দিঘি শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৬ ০১:৫০
Share:

ঠাকুরান নদীর বাঁধ কাটা হয়েছে।—নিজস্ব চিত্র।

চওড়া ও উঁচু নদীবাঁধ আগে ঢাকা ছিল ম্যানগ্রোভের সবুজ জঙ্গলে। কিন্তু বছর দশেক আগে নদী বাঁধের পাশে তৈরি হয় মাছের ভেড়ি। তার পরেই শুরু হয়েছে গোলযোগ। দিন দিন কমতে থাকে সবুজের পরিমাণ। ক্ষতি হচ্ছে নদীবাঁধের।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় আধ কিলোমিটার নদী বাঁধ কেটে জোয়ারের জল ঢোকানো হচ্ছে রায়দিঘি এলাকার বিভিন্ন মেছো ভেড়িতে। রায়দিঘির নগেন্দ্রপুর পঞ্চায়েতে দমকল হালদার পাড়ার কাছে ঠাকুরান নদীর মকবুলের ট্যাঁকের পাশে প্রায় ৪০ বিঘা এলাকা নিয়ে মাছের ভেড়ি তৈরি হয়েছে। ভেড়ি লাগোয়া বাঁধ কেটে নোনা জল ঢুকিয়ে ভেটকি, পারশে, তেলাপিয়া, বাগদা মাছ চাষ হচ্ছে। কনকনদিগি পঞ্চায়েতের মণি নদী লাগোয়া কয়েকটি মাছের ভেড়ি রয়েছে। সেখানেও নদী বাঁধ কেটে নোনা জল ঢোকানো হচ্ছে। রায়দিঘির এই সব ছোট ভেড়ির বেশির ভাগই বেআইনি ভাবে চলছে বছরের পর বছর ধরে। জেলার কয়েক হাজার হেক্টর এলাকায় গড়ে ওঠা এই ভেড়িগুলির উপরে হাজার হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভর করছে।

এ ধরনের ছোট ভেড়ি তৈরি করতে গেলে কেন্দ্রীয় সরকারের কোস্টাল অ্যাকোয়া কালচার অথরিটির অনুমোদন নেওয়ার কথা। স্থানীয় সূত্রের খবর, রায়দিঘির বেশির ভাগ ভেড়ির সেই অনুমোদন নেই। যখন যে দল রাজ্যের শাসন ক্ষমতায় থাকে, বেআইনি ভেড়ি মালিকেরা সেই দলের ছত্রচ্ছায়ায় থাকে। ফলে কেউ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে সাহস করে না। টানা বৃষ্টি হলেই প্লাবিত হচ্ছে জমি।

Advertisement

যদিও শাসক দলের স্থানীয় নেতাদের আশ্রয়ে থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে রায়দিঘির এক ভেড়ি মালিকের দাবি, ‘‘আমরা সে ভাবে বাঁধ কাটি না। শ্যালো পাম্পের সাহায্যে জল তুলে মাছ চাষ করা হয়। মাছের ভেড়িতে কাজ করেই প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ অর্থ উপার্জন করতে পারছে।’’ মথুরাপুর ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রদ্যুৎ প্রামাণিক বলেন, ‘‘কোথাও বাঁধ, জঙ্গল কাটার খবর পেলে প্রশাসনকে জানাই। তবে তেমন অভিযোগ আসে না।’’

সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, নদীবাঁধ কেটে মাছের ভেড়িতে জল ঢোকানো নিয়ে বসিরহাটে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছিল। সেখানে সুন্দরবন এলাকায় নদী বাঁধের ক্ষতি করে ভেড়িতে জল ঢোকালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement