পুকুরে মিলল তরুণের মৃতদেহ

হঠাৎই এলাকার কিছু যুবক ‘ধর ধর’ বলে তাড়া করতে ভয় পেয়ে দৌড়তে শুরু করে তারা। পিছন থেকে চিৎকার শোনা যায়, ‘‘একবার ধরতে পারলে মজা বুঝিয়ে ছাড়ব!’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাবরা শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:১৪
Share:

জয় দেবনাথ

ছাত্র-ছাত্রী মিলে জমজমাট আড্ডা চলছিল। হঠাৎই এলাকার কিছু যুবক ‘ধর ধর’ বলে তাড়া করতে ভয় পেয়ে দৌড়তে শুরু করে তারা। পিছন থেকে চিৎকার শোনা যায়, ‘‘একবার ধরতে পারলে মজা বুঝিয়ে ছাড়ব!’’

Advertisement

কেন এই হুমকি, বোঝেনি পড়ুয়ার দল। যে যার মতো বাড়ি ফেরে। ফেরেনি শুধু দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র জয় দেবনাথ (১৭)। সন্ধে ৭টার পর থেকে তার মোবাইল বন্ধ ছিল। খবর পেয়ে পুলিশও খোঁজাখুঁজি শুরু করে। রাতে স্থানীয় মানুষজন দেখেন, জয়ের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরের একটি পুকুরে ভাসছে একপাটি জুতো। রাত দেড়টা নাগাদ ওই পুকুর থেকেই জয়ের দেহ উদ্ধার হয়। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হাবরা থানার সংহতি স্টেশন-সংলগ্ন ফুলতলায়। পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় জয়ের কাকা থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাতে জানিয়েছেন, জয়ের পরিচিত নবম শ্রেণির এক ছাত্রী তাকে ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। তারপরে লোক দিয়ে খুন করানো হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশের এক কর্তা জানান, তারা কী জন্য জয়দের সে দিন তাড়া করেছিল, তা জানার চেষ্টা চলছে।

জয়ের বাবা গৌতমবাবু একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। তিনি এখন বাংলাদেশে। ছেলের মৃত্যু খবর পেয়ে ফিরে আসছেন। তাঁর দুই ছেলে। ছোট ছেলে কয়েক বছর আগে বাড়ির কাছের ডোবায় ডুবে মারা গিয়েছিল। ফের বড় ছেলের একই ভাবে জলে ডুবে মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছেন না। এলাকায় শান্ত স্বভাবের ছেলে বলেই পরিচিত ছিল জয়। হাবরা মডেল হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিল সে।

Advertisement

এ দিন বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, ইটের গাঁথনি, টিনের চালের বাড়িতে টেবিলে বই-খাতা সাজানো। দেওয়াল জুড়ে বিরাট কোহলির ছবি। মা বীথিকাদেবী কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘যারা আমার কোল ফাঁকা করে দিল, তাদের কঠিন শাস্তি চাই।’’ যে বন্ধু-বান্ধবীদের সঙ্গে ঘটনার সন্ধ্যায় জয় গল্প করছিল, তারা জানিয়েছে, কেন ছেলেগুলো তাড়া করেছিল, বুঝতে পারেনি কেউ। যে যার মতো বাড়ি ফিরে যায়। তবে জয়ের এক বন্ধুর কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, সন্ধে ৭টা থেকে জয়ের ফোন বন্ধ থাকলেও রাত ১১টা ৫৮ মিনিটে জয়ের মোবাইল থেকে ফেসবুকে একটি মেসেজ পাঠানো হয়। তাতে লেখা ছিল, ‘ভাই, কেমন আছিস।’ বিষয়টি ভাবাচ্ছে পুলিশকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন