naihati

বাজি হাব তৈরি নিয়ে আলোচনা শিল্পাঞ্চলে

নৈহাটির বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পরে স্থানীয় স্তরে দাবি উঠছে, বাজি কারখানাগুলিকে এ বার তা হলে সরকারি অনুমোদন দেওয়া হোক। তাতে নজরদারিতে যেমন সুবিধা হবে, তেমনই সরকারি কোষাগারও ভরবে। কারখানার মালিকেরাও শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবতে বাধ্য হবেন। প্রয়োজনে শিল্পাঞ্চলের খালি জমিতে এ ধরনের বাজি হাবও করা যেতে পারে।

Advertisement

সুপ্রকাশ মণ্ডল 

 নৈহাটি শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২০ ০০:২৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

অলিতে-গলিতে বাজি কারখানা। বেশির ভাগই অবৈধ। লাইসেন্স বা অন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের হদিস নেই। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল এবং নৈহাটি-লাগোয়া আমডাঙায় এই সংখ্যাটা প্রায় হাজারখানেক, জানাচ্ছেন স্থানীয় মানুষ জন। সঠিক পরিসংখ্যান নেই পুলিশ-প্রশাসনের কাছে। তবে এখান থেকে সারা রাজ্যে বাজি সরবরাহ হয়, তা জানেন প্রশাসনের কর্তারা। তারপরেও নজরদারির অভাব।

Advertisement

নৈহাটির বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পরে স্থানীয় স্তরে দাবি উঠছে, বাজি কারখানাগুলিকে এ বার তা হলে সরকারি অনুমোদন দেওয়া হোক। তাতে নজরদারিতে যেমন সুবিধা হবে, তেমনই সরকারি কোষাগারও ভরবে। কারখানার মালিকেরাও শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবতে বাধ্য হবেন। প্রয়োজনে শিল্পাঞ্চলের খালি জমিতে এ ধরনের বাজি হাবও করা যেতে পারে।

সম্প্রতি নৈহাটির দেবক গ্রামে একটি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটে। সেই ঘটনায় আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয় পাঁচ জনের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ফি বছরই কোনও না কোনও বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়। গত পাঁচ বছরে বাজি কারখানাগুলিতে অন্তত পাঁচটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যেগুলিতে প্রাণহাণি হয়েছে। বছর তিনেক আগে দেবক গ্রামেই অন্য একটি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়েছিল। সেই ঘটনাতেও চার জনের মৃত্যু হয়েছিল। তারপরেও বন্ধ হয়নি অবৈধ বাজি কারখানা।

Advertisement

এলাকার বাসিন্দারা অনেকে জানালেন, দীর্ঘ দিন ধরে এই কাজের অভিজ্ঞতা থাকায় দক্ষিণভারতের শিবকাশীতেও ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের কারিগরদের চাহিদা আছে। দেবকের বাসিন্দা সমীর হালদার বাজি শ্রমিক। বললেন, ‘‘যে বাড়ির ছেলে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে মারা গিয়েছে, মাস কয়েক পরে সেই বাড়ির অন্য কোনও সদস্য সেই একই পেশায় যেতে বাধ্য হন। কারণ, এ ছাড়া এই এলাকায় অন্য কোনও কাজ নেই।’’

এলাকার বাজি শ্রমিক রমেশ হালদার জানান, কারখানাগুলিতে ন্যূনতম নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। ফলে প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে বাধ্য হন সকলে। বাজি শ্রমিকদের দাবি, সরকার বরং কারখানার অনুমোদন দিক। তা হলে কারখানা মালিকেরা নিয়ম-কানুন মানতে বাধ্য হবেন। তা হলে দমকল-পরিবেশ দফতর থেকে অনুমোদন জোগাড় করতে হবে। সে ক্ষেত্রে পরিবেশ এবং শ্রমিকদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে বাধ্য হবেন শ্রমিকেরা। দুর্ঘটনাজনিত বিমার সুবিধাও পাবেন শ্রমিকেরা। দক্ষিণ ভারতের কারখানাগুলিতে এই ধরনের বিমা চালু রয়েছে বলে দাবি করলেন নৈহাটির বাজি শ্রমিকদের একাংশ।

এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে বা শিল্পাঞ্চলের বেশ কিছু পঞ্চায়েত এলাকায় প্রচুর ফাঁকা জমি রয়েছে। সেগুলিতে বাজি হাব করা যেতে পারে। নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘এমন কোনও প্রস্তাব এখনও আমার কাছে আসেনি। যদি তেমন কোনও প্রস্তাব আসে, তা হলে তা সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠিয়ে কথা বলব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন