কোথায় প্যাসেঞ্জার? পেট্রাপোলে নির্মাল্য প্রামাণিকের তোলা ছবি।
সকালে ১১টা। পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় তৃণমূল প্রভাবিত ট্যাক্সি শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসের সামনে মুখ ভার করে বসেছিলেন কয়েকজন ট্যাক্সি চালক। নোট বাতিলের পরে ভাড়া কেমন হচ্ছে?
জানালেন, ইউনিয়ন অন্তর্ভূত ৪২টি ট্যাক্সি এখানে। বাংলাদেশ থেকে বৈধ ভাবে এ দেশে আসার পরে যাত্রীদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দেওয়ার অন্যতম ভরসা ওই ট্যাক্সিগুলি। নোট বাতিলের আগে পর্যন্ত দৈনিক কমবেশি ২৫টি ট্যাক্সির ভাড়া হতো। এখন সেই সংখ্যা দৈনিক ৩-৪টিতে নেমে এসেছে। অনেকেই ট্যাক্সি নিয়ে ইউনিয়ন অফিসের সামনে আসছেন। সারা দিন বসে থাকছেন। কিন্তু একটিও ভাড়া না হওয়ায় খালি হাতে সন্ধেবেলা বাড়ি চলে যাচ্ছেন।
আরমান সর্দার নামে এক ট্যাক্সি চালক বলেন, ‘‘আমি স্থানীয় পাল্লা এলাকা থেকে রোজ ট্যাক্সি নিয়ে আসি। তেল-খাওয়া নিয়ে দৈনিক ২০০ টাকা খরচ। গত কয়েক দিনে একটি ভাড়া পাইনি।’’ ট্যাক্সি সংগঠনের সহ সম্পাদক মিন্টু দাস জানান, বাংলাদেশ থেকে এসে অনেকে ট্রেনে-বাসে যাতায়াত করছেন। ফলে ভাড়া হচ্ছে না।
শুধু ট্যাক্সি চালকেরা নয়, নোট বাতিলের ধাক্কায় সমস্যায় পড়েছেন বাস কর্মীরাও। পেট্রাপোল থেকে কলকাতাগামী অনেক বাস রয়েছে। বেসরকারি পরিবহণ সংস্থার অন্তর্গত বাসগুলিতে যাত্রী সংখ্যা অর্ধেকের বেশি কমে গিয়েছে। পরিবহণ কর্মীদের দৈনিক বেতন দিতেও সমস্যা হচ্ছে। একটি বেসরকারি পরিবহণ সংস্থার কর্মী বরুণ দাস বলেন, ‘‘দিনে দৈনিক ৮০০ টাকা করে বেতন পাই। কিন্তু মালিকেরা ১০০০ টাকার নোট দিতে চাইছেন। ফলে টাকা না নিয়েই দিন কাটছে।’’
নোট বাতিলের ধাক্কা এসে পড়েছিল পেট্রাপোলের মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্রগুলিতেও। তবে এখন পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। কার্তিক ঘোষ নামে এক মুদ্রা বিনিময় ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘যে সব ভারতীয় এ দেশ থেকে বাংলাদেশে যাচ্ছেন, তাঁরা আমাদের খুচরো টাকা দিচ্ছেন। সে কারণে খুচরো টাকার জোগান একটু বেড়েছে। আমরা এখন বাংলাদেশিদের এক হাজার টাকা পর্যন্ত ভাঙিয়ে দিতে পারছি। যদিও তাতেও সমস্যা পুরোপুরি মিটছে না।’