Dengue

ডেঙ্গির হানা দেগঙ্গায়, চুপ প্রশাসন

কলকাতা পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ফৈয়াজ আহমেদ বলেন, ‘‘অনেকে মারা গেলে তবে সরকারের হুঁশ ফেরে। ডেঙ্গি প্রতিরোধে এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’ বাড়ির আত্মীয়-স্বজন জ্বরে ভুগছেন। এখনও পর্যন্ত স্বাস্থ্য দফতরের কারও দেখা মেলনি বলে তিনি জানান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দেগঙ্গা শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৭ ০৫:১১
Share:

আক্রান্ত: দেগঙ্গায়। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

মাঝে মাঝে জ্বর আসছে বছর আঠারোর সফিকুল ইসলামের। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় গোটা পরিবার।

Advertisement

শুধু সফিকুলই নন, দেগঙ্গা ব্লকের দেগঙ্গা ১ পঞ্চায়েতের আমিনপুর বিশ্বাসপাড়া ও চাঁদপুর, দাসপাড়ার বাসিন্দারাই এখন চিন্তায় রয়েছেন। কারণ দিনের পর দিন এলাকায় জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে। জ্বরে আক্রান্ত বেশ কিছু মানুষের বারাসত জেলা হাসপাতাল ও কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে চৌরাশি পঞ্চায়েতের চিংড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম (৪১) জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন বারাসত হাসপাতালে। চলতি মাসের ১৯ তারিখে তিনি মারা যান। ইতিমধ্যে কয়েকজনের রক্তে সরকারি ভাবে ডেঙ্গির জীবাণু মেলার খবরও মিলেছে। অথচ নজর নেই পঞ্চায়েত ও স্বাস্থ্য দফতরের বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। আতঙ্কে দিন কাটছে গ্রামবাসীর।

Advertisement

ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, গ্রামে অনেকেই জ্বরে ভুগছেন। কলসি টাঙিয়ে মাথায় জল ঢালা হচ্ছে। চলছে হাত পাখা দিয়ে বাতাস। রোগের হাত থেকে বাঁচতে নিজেরাই ব্লিচিং পাউডার ছড়াচ্ছেন। আমিনপুর গ্রামের আয়ুব আলি বিশ্বাস বলেন, ‘‘স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে সবার জ্বর। কাকে ছেড়ে কাকে যে সামলাই। নিজের টাকায় ৮ কিলোগ্রাম ব্লিচিং পাউডার কিনে বাড়ির চারিপাশে ছড়িয়েছি।’’ ঘটনার কথা জানানো হলেও সরকারি ভাবে এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

ডেঙ্গি কী

উপসর্গ: লাগাতার প্রবল জ্বর (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তারও বেশি)

কী ভাবে ছড়ায়

মশা থেকে বাঁচতে: বাড়িতে ও আশেপাশে জল জমতে দেবেন না।

জ্বর হলে দেরি না করে অবশ্যই রক্ত পরীক্ষা করান

সুস্থ থাকতে

ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খান। যেমন, লেবু, পেয়ারা, পেঁপে, বিট, বাঁধাকপি নিয়মিত খাওয়া জরুরি, জল বেশি করে খান। খেতে পারেন ফলের রস, ডাবের জলও, দুধের মধ্যে হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে নিয়মিত পান করুন , রোজকার খাদ্য তালিকায় রাখুন তাজা আনাজ। পালং শাক, সর্ষে শাক, নিমপাতা, পেঁপেপাতা বেশি করে খান, ভাজাভুজি ও তৈলাক্ত খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন

কলকাতা পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ফৈয়াজ আহমেদ বলেন, ‘‘অনেকে মারা গেলে তবে সরকারের হুঁশ ফেরে। ডেঙ্গি প্রতিরোধে এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’ বাড়ির আত্মীয়-স্বজন জ্বরে ভুগছেন। এখনও পর্যন্ত স্বাস্থ্য দফতরের কারও দেখা মেলনি বলে তিনি জানান।

আমিনপুর গ্রামের বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন কলকাতার আরজিকর হাসপাতাল ১১ দিন ভর্তি থেকে ডেঙ্গির চিকিৎসা করে সদ্য বাড়ি ফিরেছেন। পরিবারের অন্য সদস্যরাও জ্বরে কাতরাচ্ছে। কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না অসুস্থ সাদ্দাম। জ্বর না কমায় সরজ্জাম বিবি ও তাঁর বৌমা আজুরা বিবিকে বারাসত জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জ্বর ও ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিয়েছে স্বীকার করে দেগঙ্গা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আব্দুল রউফ বলেন, ‘‘আজ, বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়েছে। শীঘ্র প্রতিরোধক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

কিন্তু তা কবে হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন