নিষিদ্ধ, তবু প্লাস্টিকের ব্যবহার চলছে রমরমিয়ে

প্লাস্টিক ও থার্মোকলের ব্যবহার নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও শহর জুড়ে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ব্যবহার চলছেই। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাবড়া শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৪৩
Share:

যথেচ্ছ: অবাধে চলছে প্লাস্টিকের ব্যবহার। ছবি: সুজিত দুয়ারি।

প্লাস্টিক ও থার্মোকলের ব্যবহার নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও শহর জুড়ে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ব্যবহার চলছেই।

Advertisement

হাবড়ার বাজার-দোকান সর্বত্র প্রকাশ্যেই ক্রেতা-বিক্রেতারা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করছেন।

প্লাস্টিকের ব্যবহার কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। শহরবাসী জানালেন, দুর্গাপুজোর আগে থেকে কম বেশি প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ব্যবহার ফের শুরু হয়েছে। কিন্তু এখন ব্যবহার বেড়ে গিয়েছে।

Advertisement

কিন্তু কেন?

২২ অক্টোবর হাবড়া পুরসভার পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এখন সেখানে বসেছে প্রশাসক। আগে পুরসভার তরফে বাজার দোকানগুলোতে নিয়মিত অভিযান চালানো হত। ফলে ভয়ে কেউ প্লাস্টিক ব্যবহার করতেন না। প্রশাসক বসার পরে সেই নজরদরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

গত বছর হাবড়া শহরে জ্বর-ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়িয়েছিল। বহু মানুষ আক্রান্ত হন। কয়েক জন মারাও যান।

ওই সময়ে জ্বর ও ডেঙ্গির প্রকোপের কারণ খতিয়ে দেখে পুর কর্তৃপক্ষের মনে হয়েছিল, প্লাস্টিক ও থার্মোকলের যথেষ্ট ব্যবহার ছিল তার অন্যতম বড় কারণ। তা ছাড়া, মাত্রাতিরিক্ত প্লাস্টিকের ব্যবহার দূষণ ছড়াচ্ছিল। এরপরেই পুর কর্তৃপক্ষ চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে শহরে প্লাস্টিক ও থার্মোকলের ব্যবহার সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

ওই ঘোষণার আগের মাস দু’য়েক সময় ধরে এলাকার মানুষকে প্লাস্টিক দূষণ সম্পর্কে সচেতন করতে পুরসভার তরফে প্রচার কর্মসূচি নেওয়া হয়। শহরের ৭৮টি ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি, পুলিশ ও পুর কর্তৃপক্ষ বৈঠক করেন।

১ জানুয়ারির পর থেকে বাজার ও দোকান-হাটে পুরসভা-পুলিশ নিয়মিত ধরপাকড় চালাতে থাকে। প্রচুর প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ও পলিথিন বাজেয়াপ্ত হয়। এ সবের জেরে প্লাস্টিকের ব্যবহার কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

প্রাক্তন পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস বলেন, ‘‘প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ, পলিথিন ও থার্মোকলের ব্যবহার আমরা প্রায় ৯৫ শতাংশ বন্ধ করতে পেরেছিলাম।’’ এখন যে প্লাস্টিকের ব্যবহার ফের বেড়ে গিয়েছে, তা মেনে নিচ্ছেন তিনিও। তাঁর কথায়, ‘‘প্রশাসকের কাছে বিষয়টি জানাচ্ছি।’’

হাবড়া শহরের বড় বাজার, চাল বাজার, তেঁতুলতলা বাজার, পাটপট্টি কালীবাড়ি বাজার-সহ কয়েকটি বাজারে প্রকাশ্যেই প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগে করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। প্লাস্টিকের পলিথিন দিয়ে অস্থায়ী দোকানে ছাউনি দেওয়া হয়েছে। এক দোকানি বললেন, ‘‘সকলেই তো আবার প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করছেন। পুরসভা থেকেও তো আর কিছু বলা হয়নি।’’

শহরের ছোট-বড় নিকাশি নালার মধ্যে প্লাস্টিকের ক্যারিবাগের স্তূপ জমে রয়েছে। সে সবও সাফাই হচ্ছে না বলে অভিযোগ। এ বছর জ্বর-ডেঙ্গিতে কেউ মারা না গেলেও অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। রয়েছে মশার উপদ্রবও। তারপরও মানুষ সচেতন হয়নি। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে পদক্ষেপ করা হবে। মহকুমাশাসক তাপস বিশ্বাস ইতিমধ্যেই পুরকর্মীদের নিয়ে এ ব্যাপারে আলোচনা করেছেন। তিনি জানান, প্লাস্টিকের ব্যবহারের বিষয়টি কানে এসেছে। কড়া পদক্ষেপ করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন