Overloading

চলছে জরিমানা,  বন্ধ হচ্ছে না অতিরিক্ত পণ্য পরিবহণ

অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই একটি ট্রাক ছুটে যাচ্ছে পেট্রাপোলের দিকে।  ট্রাকে থাকা মালপত্র পলিথিন দিয়ে ঢাকা। একটি ট্রাক দেখে মনে হল যে কোনও সময়ে তা উল্টে পড়তে পারে। একটি ট্রাকে পণ্য এতটাই বোঝাই করা, ছোট যান চালকেরা ট্রাকের ধারে কাছে যেতে ভয় পান। যশোর রোডে হামেশাই চোখে পড়ে এই দৃশ্য। 

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

বনগাঁ শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:১৯
Share:

নজর-এড়িয়ে: এ ভাবেই চলছে ওভারলোডিং। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই একটি ট্রাক ছুটে যাচ্ছে পেট্রাপোলের দিকে। ট্রাকে থাকা মালপত্র পলিথিন দিয়ে ঢাকা। একটি ট্রাক দেখে মনে হল যে কোনও সময়ে তা উল্টে পড়তে পারে। একটি ট্রাকে পণ্য এতটাই বোঝাই করা, ছোট যান চালকেরা ট্রাকের ধারে কাছে যেতে ভয় পান। যশোর রোডে হামেশাই চোখে পড়ে এই দৃশ্য।

Advertisement

বনগাঁ-চাকদা রাজ্য সড়কেও এমন দৃশ্য দেখা যায় প্রায়ই। এ দিকে, অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই ট্রাক ও ছোট যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে পরিবহণ দফতরের তরফে নিয়মিত অভিযান চলছে। অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই গাড়ি ধরে আর্থিক জরিমানাও করা হচ্ছে। কিন্তু এত কিছুর পরও অতিরিক্ত পণ্য ভর্তি গাড়ি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি।

যশোর রোড ধরে কোনও পণ্যবোঝাই ট্রাককে পেট্রাপোল বন্দরে আসতে হলে গাইঘাটা থেকে চারটি সেতু পেরোতে হয়। যার মধ্যে দু’টি সেতুর অবস্থা খুবই নড়বড়ে। ওইসব সেতুর উপর দিয়ে চলছে অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই ট্রাক। ফলে সেতুর ক্ষতি হচ্ছে। যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে।

Advertisement

বনগাঁ মহকুমা পরিবহণ দফতরের আধিকারিক বিপ্লব প্রধান বলেন, ‘‘বনগাঁ মহকুমায় গত কয়েক দিনে ১০টি অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই গাড়ি ধরা হয়েছে। আর্থিক জরিমানাও করা হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা।’’

ওভারলোডিং পুরোপুরি বন্ধ করা যাচ্ছে না কেন?

জেলা পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মোটর ভেহিকেলস ইন্সপেক্টর জেলায় যথেষ্ট সংখ্যক না থাকায় ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চালাতে পারে না পরিবহণ দফতর। তা ছাড়া, আইন অনুযায়ী অতিরিক্ত পণ্যবোঝাই গাড়ি ধরপাকড় বা তাঁদের আর্থিক জরিমানা পুলিশ করতে পারে না। যান চালকেরা সেই সুযোগটা নিচ্ছেন। জেলা পরিবহণ দফতরের আধিকারিক সিদ্ধার্থ রায় বলেন, ‘‘বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’ মাঝেরহাটের ঘটনার পরে জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের সরকারি সদস্য গোপাল শেঠ জানিয়েছেন, ওভারলোডিং বন্ধ করতে আরও বেশি করে ধরপাকড় করা হচ্ছে। বনগাঁ মহকুমায় যশোর রোডে থাকা চারটি সেতুর কাছে পরিবহণ দফতরের কর্তারা নজরদারি করবেন।

সীমান্ত বাণিজ্যে ওভারলোডিংয়ের বিষয়ে পেট্রাপোল এক্সপোর্টার্স অ্যান্ড ইমপোর্টার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পরিতোষ বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওভারলোডিং বেআইনি। তা আমাদের মানতে হবে।’’ কিন্তু এ ক্ষেত্রে কিছু সমস্যার কথা জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘এখন গড়ে প্রতিদিন ২০০-২৫০ পণ্য ভর্তি ট্রাক পেট্রাপোল থেকে বেনাপোলে যায়। ওভারলোডিং বন্ধ হয়ে গেলে ওই সংখ্যক ট্রাক বেনাপোলে গেলেও মালপত্রের পরিমাণ কমে যাবে। ব্যবসায়ীরা আর্থিক ভাবে

ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’’

২০ চাকা বা তার বেশি চাকার ট্রেলার বন্দরে না এলে সীমান্ত বাণিজ্যে তার প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছেন ক্লিয়ারিং এজেন্ট সংগঠনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী। ফেডারেশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটার অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক দিলীপ দাস বলেন, ‘‘আমরা চাই ওভারলোডিং সম্পূর্ণ বন্ধ করুক সরকার। ট্রাকের যন্ত্রাংশের ফলে ক্ষতি হচ্ছে। ওভারলোডিং বন্ধ করতে আমাদের সরকার কাজে লাগাতে পারে।’’

কেন হচ্ছে ওভারলোডিং?

দিলীপ বলেন, ‘‘কিছু ট্রাক চালক যাঁদের ১০-১২টি ট্রাক রয়েছে তাঁরা ওভারলোডিংয়ে যুক্ত। অতিরিক্ত লাভের আশায় বেশি মালপত্র তোলা হচ্ছে ট্রাকে।’’ তাঁর দাবি, রাজ্যের যে সব এলাকায় পণ্য ট্রাকে তোলা হয়, সেখানে নজরদারি বাড়াক সরকার। এটা করতে পারলে ওভারলোডিং বন্ধ হয়ে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন