Kali Puja 2023

লোককথার সমাহার শ্মশানকালীর পুজো ঘিরে

শ্মশানের বড় নিম গাছের নীচে এক কালী সাধক হোগল পাতার ছাউনি দেওয়া ঘরে দেবীর আরাধনা করতেন। সেটিই এখন পাকা মন্দিরে পরিণত হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মন্দিরবাজার শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:০৩
Share:

পূজিতা হন এই দেবীমূর্তি। —নিজস্ব চিত্র।

মন্দিরবাজারের দক্ষিণ বিষ্ণুপুর মহাশ্মশানের কালীপুজো ঘিরে নানা রহস্য জড়িয়ে রয়েছে।

Advertisement

শ্মশানটি বহু বছরের পুরনো। কালীঘাট থেকে গঙ্গা বয়ে বারুইপুর, জয়নগর হয়ে চলে গিয়েছে দক্ষিণ বিষ্ণুপুর মহাশ্মশানের কাছে। ওই আদিগঙ্গার পাড়ে বহু বছর আগে থেকে প্রায় সারা জেলার মানুষ দাহকার্য করতে আসেন। শ্মশান এক সময়ে ছিল গভীর জলা-জঙ্গলে ঘেরা। সে সময়ে দাহ করে যাওয়ার পরে শরীরের নানা অংশ পড়ে থাকায় বন্যপ্রাণী উৎপাত করত।

শ্মশানের বড় নিম গাছের নীচে এক কালী সাধক হোগল পাতার ছাউনি দেওয়া ঘরে দেবীর আরাধনা করতেন। সেটিই এখন পাকা মন্দিরে পরিণত হয়েছে।

Advertisement

শ্মশানকালী মায়ের ভক্তেরা দেবীকে জাগ্রত বলে মনে করেন। সন্তান অসুস্থ হলে মায়ের কাছে মানত করেন অনেক বাবা-মা। প্রতি অমাবস্যায় কালী পুজোয় অনেক মহিলা সন্তানের মঙ্গল কামনায় দেবীর সামনে নিজের বুকে বেলকাটা ফুটিয়ে রক্ত বের করে দেবীকে উৎসর্গ করেন।

যাঁরা তন্ত্র সাধনা করেন, তাঁরাও কালীপুজোর রাতে চলে আসেন মন্দির চত্বরে। দেবীদর্শনের পরে মন্দিরের পাশে ঝোপে-ঝাড়ে লাল কাপড়ের ফিতে দিয়ে ঘিরে নেন। নিশুতি রাতে দেহ পোড়ানো কাঠকয়লার উপরে ইট পেতে চলে হোমযজ্ঞ। আগে পাশে রাখা থাকত নরকঙ্কালও। শ্মশানের পাশে তৈরি খিচুড়ি ও আলুরদম ভক্তদের খাওয়ানো হত।

কয়েক বছর ধরে তন্ত্রসাধকদের সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। আগে ভক্তেরা শ’খানেক পাঁঠা বলি দিতেন। কিন্তু দেবীর কাছে থেকে পাঁঠা বলি নিষেধ, এই স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পর থেকে বলি বন্ধ। পরিবর্তে আখ, চাল, কুমড়ো, শশা, কলা ও আপেল বলি দেওয়া হয় বলে জানালেন মন্দিরের পুরোহিত রামচন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায়। বংশ পরম্পরায় শ্মশানকালীর পুজো করে আসছেন তাঁরা। শ্মশানকালীর পুজো প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো বলে দাবি উদ্যোক্তাদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন