সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সুবেদার মনোরঞ্জন সরকার ব্যারাকপুরের বাসিন্দা। চাকরি সূত্রে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় কাটিয়েছেন তিনি। তাঁর একমাত্র সন্তানের জন্মের পর থেকেই কিছু সমস্যা ছিল। তাঁর স্ত্রী বিষয়টি নিয়ে অনুযোগ করলেও মনোরঞ্জনবাবু বিষয়টি সে ভাবে আমল দেননি। পরে বুঝতে পারেন, ছেলে সুস্থ নয়, অটিজমের শিকার।
কল্যাণীর জেএনএম হাপাতালের চিকিৎসক প্রদীপকুমার মোহান্তিরও একই খেদ। তিনি নিজে চিকিৎসক হয়েও ছেলের অসুখ ধরতে পারেননি। নদিয়ার চাকদহের শ্যামলকুমার রায়, কল্যাণীর প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা কাজল বিশ্বাসেরাও তাঁদের সন্তানের অস্বাভাবিকত্ব বুঝতে দেরি করে ফেলেছিলেন। তাঁরা প্রত্যেকেই ‘অটিস্টিক’ সন্তানের বাবা-মা।
শুধু ওঁরা নন, অজ্ঞানতার কারণে এই বোঝার ভুল করেছেন অনেকেই। ফল ভুগছে তাঁদের সন্তানেরা। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, অটিজম একটি স্নায়বিক সমস্যা। যাতে মস্তিষ্কের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। এর ফলে রোগীর কথা বলতে, বুঝতে, নতুন কিছু শিখতে সমস্যা হয়। এই রোগ পুরোপুরি মুক্তির উপায় আজও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে শৈশবেই ওই রোগ চিহ্নিত করা গেলে কিছুটা নিরাময়ের সম্ভাবনা থাকে।
কেন্দ্রের সামাজিক ন্যায় ও কল্যাণ মন্ত্রকের ন্যাশনাল ট্রাস্ট স্বীকৃত কল্যাণী লাইফ ইনস্টিটিউট সম্প্রতি কল্যানীর বি ব্লকে ‘অটিজম’ রোগ নিয়ে পাঁচ দিনের কর্মশালার আয়োজন করেছিল। সেখানেই অটিজমে আক্রান্ত রোগী ও তাদের বাবা-মা উপস্থিত ছিলেন। উঠে আসে অটিজম নিয়ে নানা কথা। বক্তারা এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণ চিহ্নিতকরণ এবং তার পরবর্তী চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করেন। আয়োজক সংগঠনের সম্পাদক সিদ্ধার্থশঙ্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অটিজম রোগে আক্রান্ত রোগী এবং তাঁদের পরিবারদের প্রতি সকলে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিক, আমরা এটাই চাই।’’