ঘরসম্পত্তি জলের তলায়, আতান্তরে পরিবার
Durga Puja 2021

flood: ‘নতুন জামা পরে পুজো দেখতে যাবে বলেছিল ওরা’

আতঙ্কে ঘর ছেড়েছেন সে সব পরিবারের সদস্যেরা। দুর্গাপুজোয় হঠাৎই নিরানন্দের পরিবেশ এলাকায়।

Advertisement

প্রসেনজিৎ সাহা

বাসন্তী শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২১ ০৮:০৮
Share:

দিশাহারা: সন্তানদের নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন মা দীপালি। নিজস্ব চিত্র।

ভেসে আসছে ঢাকের বাদ্যি। মাইকে বাজছে আগমনী গান। এরই মধ্যে হতাশ বিষাদের সুর বাসন্তীর রাধাবল্লভপুর গ্রামে। শুক্রবার এই গ্রামেরই প্রায় ৩০টি বাড়ি হোগল নদীর গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত আরও প্রায় ৭০টি বাড়ি। প্রায় দু’শো মিটার এলাকা জুড়ে নদীবাঁধে ধস নামায় ঘরবাড়ি তলিয়ে গিয়েছে অনেকের। আশপাশের বেশ কয়েকটি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। আতঙ্কে ঘর ছেড়েছেন সে সব পরিবারের সদস্যেরাও। দুর্গাপুজোয় হঠাৎই নিরানন্দের পরিবেশ এলাকায়।

Advertisement

রাধাবল্লভপুর গ্রামের বাসিন্দা দীপালি মণ্ডলের দুই ছোট ছোট সন্তান। বাড়ি, দোকান সবই গিলে খেয়েছে হোগল। ঘর থেকে কিছুই বের করতে পারেননি। ছেলেমেয়ের জন্য আগের দিনই নতুন জামা কিনে এনেছিলেন স্বামী সঞ্জয়। সে সবও নদীতে তলিয়েছে। বাড়ি-লাগোয়া মুদিখানা ছিল। সেই আয়েই সংসার চলত। তা-ও তলিয়ে গিয়েছে। পুজোর আনন্দের তো প্রশ্নই নেই, আগামী দিনগুলো কী ভাবে চলবে, তা ভেবে পাচ্ছেন না মণ্ডল দম্পতি। দীপালি বলেন, ‘‘নতুন জামাকাপড় পেয়ে ছেলেমেয়ে দু’টো খুব খুশি হয়েছিল। অনেক রাত পর্যন্ত জেগে জেগে গল্প করছিল, কোথায় কোথায় ঠাকুর দেখতে যাবে। কিন্তু ভাসিয়ে নিয়ে গেল রাক্ষুসে নদী।”

একই অবস্থা গ্রামের বহু পরিবারের। একাদশ শ্রেণির ছাত্রী রুবিনা খাতুনের বইপত্রও বাড়িঘরের সঙ্গে ভেসে গিয়েছে। রুবিনা বলে, ‘‘বাবা দিনমজুর। অনেক কষ্টে এ বার বই কিনে দিয়েছিলেন। কিন্তু সবই ভেসে গেল। বাড়ি থেকে কিছুই বের করতে পারিনি।”

Advertisement

শুক্রবার বিকেল থেকেই নদীবাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু অমাবস্যার কটালের ফলে নদীতে জল বেশি থাকায় মেরামতিতে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে সেচ দফতরের কর্মীদের। শনিবার ভাটার সময়ে ধসে যাওয়া নদীবাঁধের বেশ খানিকটা মেরামত করা গিয়েছে। সেচ দফতরের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার অলোকরঞ্জন দাঁ বলেন, ‘‘বাঁধ মেরামতির কাজ জোরকদমে চলছে। আপাতত ভাঙনটা রোধ করা গিয়েছে। ঝামা ইট, মাটি ভর্তি বস্তা, বাঁশ, লোহার তাঁরের নেট দিয়ে মেরামতি চলছে। পাশাপাশি বাঁশের খাঁচা দিয়ে বাঁধের পাশে ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।” গ্রামের দিকে একটি রিংবাঁধ তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সেচ দফতরের আধিকারিকেরা। তা নিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনাও চালাচ্ছেন দফতরের কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন