এখনই মেয়ের বিয়ে দেব না, বললেন বাবা

মেয়েদের আঠারো বছর না হলে বিয়ে দেওয়া আইনত দণ্ডনীয়, জানা ছিল বাবার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাবরা শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৪৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

স্কুলে ছবি লাগবে বলে বাজারে ছবি তুলতে যাচ্ছি বলে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বেরিয়েছিল মেয়েটি। পরে জানা যায়, পরিচিত এক যুবককে বিয়ে করতে চেয়ে তার বাড়িতে উঠেছে হাবরার তেঁতুলবেড়িয়ার নবম শ্রেণির কিশোরী।

Advertisement

ওই যুবকের সঙ্গে মেয়ের পরিচয় অজানা ছিল না বাবার। তিনি মেয়েকে খুঁজতে বেরিয়ে চলে যান সোনাকানিয়া এলাকায় ওই যুবকের বাড়িতে। গিয়ে মেয়ের বাবার চক্ষু চড়কগাছ। দেখেন, তাঁরই মেয়ের বিয়ের তোড়জোড় চলছে।

মেয়েদের আঠারো বছর না হলে বিয়ে দেওয়া আইনত দণ্ডনীয়, জানা ছিল বাবার। তার উপরে বাড়ি থেকে পালিয়ে মেয়ের এ হেন সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি তিনি। সোজা হাজির হন হাবরা থানায়। কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারকে জানান গোটা ঘটনা।

Advertisement

সচরাচর বহু ক্ষেত্রে নাবালিকা বিয়ের খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বন্ধ করে বিয়ে। বাবা-মায়ে বোঝাতে হয়, অল্প বয়সে মেয়ের বিয়ে দেওয়া তার শারীরিক-মানসিক স্বাস্থ্যের পক্ষে কতটা হানিকর। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মেয়ের বাবা স্বয়ং বিয়ে রুখতে থানায় হাজির হওয়ায় বিস্মিত হন পুলিশ কর্মীরা। বিয়ে রুখতে সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে পড়ে পুলিশ।

পুলিশকে দেখে পালায় যুবক। বছর পনেরোর মেয়েটিকে থানায় আনা হয়। সে অবশ্য দাবি করেছে, অবশ্য মেয়েটি জানায়, তাকে ভুলিয়ে নিয়ে গিয়েছিল ওই যুবক। সে এখন বিয়ে করবে না। লেখাপড়া করতে চায়। আর আঠারো বছর না হলে বিয়েও করবে না। লিখিত ভাবে এই প্রতিশ্রুতি পুলিশকে দিয়েছে মেয়েটি।হাবরা থানার পুলিশের তরফে মেয়েটিকে চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বাড়ি ফিরেছে সে। মেয়ের বাবার কথায়, ‘‘মেয়ের সঙ্গে ওই যুবকের সম্পর্ক আছে জানতাম। তাই খুঁজতে খুঁজতে ওর বাড়িতেই চলে গিয়েছিলাম। আমি মেয়েকে লেখাপড়া করাতে চাই। চাই ও নিজের পায়ে দাঁড়াক। বিয়ে-থার জন্য অনেক সময় পড়ে আছে।’’ হাবরা চাইল্ড লাইনের সদস্য প্রকাশ দাসের কথায়, ‘‘বাবা নিজেই নাবালিকা মেয়ের বিয়ে বন্ধ করছেন, এমন আগে দেখিনি। আমরা মেয়েটির কাউন্সেলিং করব। লেখাপড়ায় সাহয্য করব।’’ মেয়েটিকে বুধবার বারাসতে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন