ভোগান্তি: অনেকটা পথ হাঁটছেন রোগীরা। ছবি: অরুণ লোধ
বদলে গিয়েছে ঠিকানা। এর জেরে নাজেহাল হচ্ছেন রোগী। নতুন ঠিকানায় রোগীদের হেঁটে পেরোতে হচ্ছে আটশো মিটার রাস্তা। ফলে সমস্যায় পড়েছেন অসংখ্য বয়স্ক, হার্টের রোগী। পরিজনেরা জানাচ্ছেন, বজবজ স্টেশন রোড থেকে ইএসআই-এর সার্ভিস ডিসপেন্সারির ঠিকানা সরে বজবজ ইএসআই হাসপাতালে উঠে আসাই সমস্যার কারণ। সব জেনেও নিরুত্তর কর্তৃপক্ষ, বলছেন তাঁরা।
লক্ষ্মী সাউ। বজবজের বাসিন্দা হার্টের এই রোগী প্রায় প্রতি মাসেই ডাক্তার দেখাতে আসেন ইএসআই-এর সার্ভিস ডিসপেন্সারিতে। এত দিন বজবজ স্টেশনের কাছে ডি বি সি রোডে ছিল সেটি। এ বছর জুন থেকে উঠে এসেছে বজবজ ইএসআই হাসপাতাল চত্বরে। লক্ষ্মীদেবীর ছেলে অভিজিৎ সাউয়ের অভিযোগ, ‘‘ইএসআই হাসপাতালে ঢুকে আরও আটশো মিটার হাঁটতে হচ্ছে ওই বিল্ডিংয়ে পৌঁছতে। মায়ের খুবই কষ্ট হয়। রিকশা বা অটোয় গেলে ভাড়া করে যেতে হয়। তা সাধ্যের বাইরে।’’
বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তারক্ষী ছেলের জন্য ইএসআই-এর পরিষেবা মিলছে প্রৌঢ় মনোজ রায়ের। আর্থ্রাইটিসের রোগী মনোজবাবু জানান, ছেঁচড়ে যেতে হয় ডিসপেন্সারিতে। অথচ ইএসআই হাসপাতালে ঢুকতেই রয়েছে নুঙ্গি ডিসপেন্সারি। কিন্তু সেখানে দেখাতে পারবেন না বজবজের বাসিন্দারা।
রাজ্য জুড়ে ৪২টি ডিসপেন্সারি রয়েছে ইএসআই-এর। কে কোন ডিসপেন্সারিতে যাবেন, তা ঠিক হয় তাঁর বাসস্থানের ভিত্তিতে। যেমন বজবজ, পুজালী, আছিপুরের বাসিন্দারা বজবজ ডিসপেন্সারিতে ডাক্তার দেখাতে পারবেন। নুঙ্গি, মহেশতলার বাসিন্দারা যাবেন
নুঙ্গি ডিসপেন্সারিতে।
বজবজ ইএসআই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের জবাব, ‘‘আমাদের কিছু করার নেই। এটি ইএসআই কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, অটো বা রিকশা করেই তো যাওয়া যায়। অভিজিৎ বা মনোজবাবুর বক্তব্য, রিকশা ভাড়া কম করে ৫০ টাকা এবং অটো ভাড়া করলে ২০০ টাকা। নিম্নবিত্ত মানুষের পক্ষে ওই টাকা খরচ অসম্ভব, সেটা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারছেন না। তাঁদের দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েও কোনও আশ্বাস মেলেনি। এ বিষয়ে ইএসআই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। সামনের দিকে বজবজ ডিসপেন্সারিটি নিয়ে আসার জন্য এ বার সই-সহ আবেদনপত্র সংশ্লিষ্ট পুরসভা, স্থানীয় বিধায়ক এবং ইএসআই কর্তৃপক্ষের কাছে জমা করবেন রোগীর পরিজনেরা।