প্রতি বছর বর্ষা শুরু হলেই ভাসতে থাকে এলাকা। তার পরেই আশ্বাস মেলে, নিকাশি ব্যবস্থায় পরিবর্তন করা হবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাটির নীচে নিকাশি নালার কাজ শেষ করে উঠতে পারেনি আরামবাগ পুরসভা। ফলে ক্ষোভ বাড়ছে শহরবাসীর মধ্যে। আপাতত বাসিন্দাদের ক্ষোভকে সামাল দিতে পুরকর্তৃপক্ষ কিছু ওয়ার্ডে অস্থায়ী নালা করছে। যদিও পুরবাসীদের অভিযোগ, ‘‘পুরসভার তৈরি অস্থায়ী নিকাশি নালার শেষ প্রান্ত কোথায় গিয়ে পড়বে তার দিশা নেই।’’ আরামবাগের পুরপ্রধান স্বপন নন্দী নিকাশি সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ‘‘শহরের দীর্ঘ দিনের এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্যই ভূগর্ভস্থ নিকাশি নালার পরিকল্পনা করা হয়। সেই কাজ চলছে। তিনটি দফার কাজ হয়ে গিয়েছে। বাকি এক দফা কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা চলছে। কাজটি শেষ হলেই শহরের সমস্ত জমা জল কানা দ্বারকেশ্বর নদীতে ফেলা সম্ভব হবে।’’
বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিকাশি সমস্যা মেটাতে পুরসভা শুধুমাত্র অস্থায়ী ভাবে মাটি কেটে নালা তৈরি করার পরিকল্পনা করে। কিন্তু সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি। আরামবাগ শহরে আধ ঘন্টা টানা বৃষ্টি হলেই পুরসভার ১৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩টি ওয়ার্ডই জলমগ্ন হয়। উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকায় সেই জল বের হতে প্রায় ২-৫ দিন সময় লাগে। কয়েকটি ওয়ার্ডে খান পাঁচেক পাম্প চালিয়ে সেই জল বের করার চেষ্টা হলেও সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি। আবার জমা জল দ্রুত বেরিয়ে না যাওয়ায় শহরের মূল রাস্তা লিঙ্ক রোড-সহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা প্রায়ই ভেঙে যায়। সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য
পুরসভা সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১২ জুন এই শহরে ভূগর্ভে নিকাশি নালার কাজ শুরু হয়। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তালতলা বাজার থেকে আরামবাগ রেল কালভার্ট পর্যন্ত ২০৭৫ মিটার দৈর্ঘ্যের ভূগর্ভস্থ নালা নির্মাণের জন্য সে সময় বরাদ্দ ধরা হয় ৩ কোটি ৭২ লক্ষ ১৬ হাজার ৬৭৭ টাকা। আরামবাগ রেলপথ সংলগ্ন ১৯ নম্বর ওয়ার্ড হয়ে ১৭ নম্বর ওয়ার্ড এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ড দিয়ে বয়ে যাওয়া কানাদ্বারকেশ্বর নদীতে ফেলা হবে নালার জল। পরবর্তী পর্যায়ে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নিকাশি নালা এনে ওই ভূগর্ভস্থ নালায় যুক্ত করা হবে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই কাজ শেষ করতে এত দেরি কেন? পুরপ্রধান বলেন, ‘‘অপরিকল্পিত শহরটিতে ভূগর্ভে নালা করতে গিয়ে কিছু কারিগরি অসুবিধা হচ্ছে। সে সব অসুবিধার সুষ্টু সমাধান করে কাজ চালাতে গিয়েই দেরি হচ্ছে।”