ড্রেজিংয়ের কাজ শেষ হয়নি, ভেসেল পরিষেবায় ভোগান্তি

৭-৮ জানুয়ারির মধ্যে তীর্থযাত্রীদের যাতায়াতের জায়গা (চ্যানেল) পরিষ্কার করে দেওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রীয় আন্তর্দেশীয় জলপথ কর্তৃপক্ষের।

Advertisement

শান্তশ্রী মজুমদার

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৪৫
Share:

অপেক্ষার-পরে: মিলল ভেসেল। সাগরে। বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র

যা আশঙ্কা ছিল, তা-ই হল। সরকারি ভাবে গঙ্গাসাগর মেলার উদ্বোধন হয়ে গেলেও এখনও শেষ হল না মুড়িগঙ্গায় ড্রেজিংয়ের কাজ। ফলে ভেসেল চলাচলে সমস্যা এখনও পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা গেল না। বুধবার থেকে সরকারি কর্মীরাও মেলার নানা কাজে দিয়েছেন। এ দিন প্রায় ৪০ হাজার মানুষ সাগরে পাড়ি দিয়েছেন বলে প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে।

Advertisement

কিন্তু বুধবার সকাল থেকেই বিপত্তি।

৭-৮ জানুয়ারির মধ্যে তীর্থযাত্রীদের যাতায়াতের জায়গা (চ্যানেল) পরিষ্কার করে দেওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রীয় আন্তর্দেশীয় জলপথ কর্তৃপক্ষের। কিন্তু কাজ শুরু করতে দেরি হওয়ায় তাঁরা সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারেননি।

Advertisement

সাড়ে ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ভেসেল পরিষেবা বন্ধ ছিল। এর জেরে প্রচুর মানুষকে লট-৮ ঘাটে অপেক্ষা করতে হয়েছে। আগ্রার বাসিন্দা উমেশনাথ সিংহ ও তাঁর দলবল প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টা পরে টিকিট কাউন্টারের সামনে পৌঁছছেন। তিনি বলেন, ‘‘এত দেরি হয় গঙ্গাসাগর পৌঁছতে জানতাম না। খুব কষ্ট। দলে অনেক বয়স্ক মানুষও রয়েছেন। তাঁদের হয়রান হতে হল।’’

সেচ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা রোজই নাব্যতা মাপার যন্ত্র দিয়ে দেখছি ড্রেজিংয়ের পরিস্থিতি। বড় ড্রেজারটি লট-৮ ঘাটের ৩ নম্বর ও ২ নম্বর জেটির কাছে কাজ করছে। দিনের শেষে নদীগর্ভে যে পথে পলি তোলা হচ্ছে, সেই পথ হয় তো পর দিনই আবার হারিয়ে যাচ্ছে। এটা আরও বাড়তে পারে।’’ অর্থাৎ, কাজ এখনও পুরোপুরি শেষ করতে পারেনি বড় ড্রেজার ‘ক্রিশ।’ গত বছর আগে থেকে কাজ শুরু করেও প্রায় তিন ঘণ্টা পরিষেবা বন্ধ করে দিতে হয়েছিল।

২৪ ঘণ্টায় দু’বার ভাটার সময়ে পরিষেবা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এর আগে কেন্দ্রীয় ওই সংস্থা দাবি করেছিল, প্রতিবার ভাটার সময়ে এক ঘণ্টার বেশি পরিষেবা বন্ধ থাকবে না।

তবে জোর করে কিছু ভেসেল চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে নির্ধারিত সময়ের কিছুটা আগে-পরে। কয়েকটি চড়ায় আটকেও পড়ছে। ঝুঁকি নিয়ে এ ভাবে ভেসেল চালানো যাবে না বলে জানিয়েছে ভেসেল পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত তৃণমূল কর্মী ইউনিয়ন। ইউনিয়নের নেতা শক্তি মাইতি বলেন, ‘‘ড্রেজিংয়ের কাজ সময়ে শেষ হয়নি। নদীগর্ভে যাত্রীবহনের মূল পথই বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। আগামী কয়েক দিন পরিষেবার সময় কমবে।’’ রাজ্য পরিবহণ দফতরের তরফেও আগামী কয়েক দিনে সম্ভাব্য পরিষেবার তালিকায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। পুরোদমে মেলার ক’টা দিন, ১২-১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ভাটায় পরিষেবা পাঁচ-সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত মার খেতে পারে বলে আশঙ্কা। ড্রেজিংয়ের কাজ কী গতিতে হচ্ছে, তার উপরে অবশ্য সময় হেরফের হতে পারে। জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও অবশ্য আশাবাদী। তাঁর দাবি, ‘‘বুধবার থেকে ক্রিশের কর্মীদের আরও জোরদার ভাবে কাজ করতে বলা হয়েছে। পরিবহণ দফতরের সম্ভাব্য সময় থেকে অনেকটাই বেশি পরিষেবা দেওয়া যাবে বলে আশা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন