চলো পা সামলে...। ছবি: দিলীপ নস্কর।
সেতুতে ওঠার আগে থমকে দাঁড়ালেন বছর সত্তর বয়সের বৃদ্ধা। পাকা সেতুর দু’দিকের রেলিং যে ভাবে ভেঙে পড়েছে, তা দেখে মনে হল ভয় পেয়েছেন। সেতুর পাশে আড্ডা মারছিল কয়েকজন যুবক। তারা বুঝতে পেরে হাত ধরে বৃদ্ধাকে সেতু পার করিয়ে দিল তারাই।
মগরাহাট ২ ব্লকের ধনপোতা পঞ্চায়েতে নোনাতলা ও পরানখালির সংযোগকারী কাটাখালের উপরে সেতুটি সংস্কারের দাবি দীর্ঘদিনের। প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। সেতুর নীচের অংশ ও বিমের চাঙড় খসে পড়েছে। যে কোনও সময়ে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে প্রাণহানিও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা মানুষজনের।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পঁচিশ আগে কংক্রিটের সেতুটি তৈরি হয়েছিল। তারপর থেকে আজও পর্যন্ত কোনও রকম সংস্কার হয়নি। প্রায় ৭০ ফুট চওড়া সেতুটির বর্তমানে ভগ্নদশা। অথচ, ওই সেতু দিয়ে প্রতিদিন ধনপোতা, উড়েলচাঁদপুর, বাঁকিপুর পঞ্চায়েতের দাইজি, নোনাতলা, কাঁটাপুকুর, পরানখালি সহ ৮-১০ গ্রামের মানুষ চলাফেরা করেন। এ ছাড়াও, মগরাহাট স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্কুল-কলেজ, অফিস-কাছারিতে যেতেও ওই সেতু পারাপার করতে হয়। সময়ে চাষের কাজে মাঠে যেতে চাষিরাও অনেকে ওই সেতু ব্যবহার করেন। এত দিনের পুরানো সেতু হলেও এখনও এলাকার বিদ্যুৎ না পৌঁছনোয় সন্ধ্যা নামলেই সেতু ঘন অন্ধকারে ডুবে যায়। সে সময় পারাপার আরও বিপজ্জনক।
স্থানীয় বাসিন্দা তপন বর, রমজান মোল্লারা জানালেন, বছরখানেক আগে সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এই এলাকায় একটি সেতুর শিল্যান্যাস অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এলে তাঁকেও ওই সেতুটি সংস্কারের বিষয়ে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছিল। কিন্তু আজও কোনও ব্যবস্থা হল না।
এ বিষয়ে স্থানীয় ধনপোতা পঞ্চায়েতের প্রধান দীনবন্ধু কয়াল বলেন, ‘‘ওই সেতুটি সংস্কারের জন্য প্রকল্প তৈরি করে জেলায় পাঠানো হয়েছিল। সেটি অনুমোদন হয়েছে।’’ মগরাহাট সাবডিভিশনের সেচ দফতরের সহকারী বাস্তুকার দীপক দাস জানান, ওই সেতুর সংস্কারের টাকা অনুমোদন হলেই বর্ষার পরে কাজ শুরু করা হবে।