রঙবাহারি: বনগাঁয় রথের সাজ। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
পুরনো প্রথা মেনে রথের মেলা ঘিরে সাত দিন ধরে চলে নরনারায়ণ সেবা ও হরিনাম সংকীর্তনের আসর। ডায়মন্ড হারবারের কপাটহাট শিব সঙ্ঘের পরিচালনায় রথের মেলা ঘিরে অনেক আগে থেকেই এলাকার মানুষের মধ্যে উৎসাহের সীমা নেই।
এক সময়ে ডায়মন্ড হারবার শহর বা আশেপাশের এলাকায় তেমন কোন রথের মেলা বসত না। বছর আঠাশ আগে এলাকার প্রবীণরা রথের মেলা শুরু করেন। প্রায় ৩০ ফুট উচ্চতার লোহার ফেম ও কাঠ দিয়ে রথটি তৈরি করা হয়েছিল সে সময়ে। নিম কাঠ দিয়ে আড়াই থেকে তিন ফুট উচ্চতার তৈরি হয় জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি। পুরনো রীতি মেনে ডায়মন্ড হারবারের ভারত সেবাশ্রমে সারা বছর রথ থাকে। ওটাই জগন্নাথ দেবের বাড়ি।
রথের দিন মাসির বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে, কপাটহাট শিব সঙ্ঘের কাছে। রথের যাত্রাপথে শ’য়ে শ’য়ে মহিলারা শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি করেন। রশির টানে তরতরিয়ে রথ এগোয় কপাটহাটের দিকে। যাওয়ার পথে অনেকেই ব্যাগ-বোঝাই বাতাসা, ফল-মূল ছড়িয়ে দেন ভক্তদের দিকে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা লেগে যায় আড়াই কিলোমিটার রাস্তা পার হতে।
সঙ্ঘের পাশে দেবদেবীর রাখার জন্য তৈরি করা হয়েছে সাদা মার্বেল বসানো মন্দির। মন্দির-লাগোয়া খালি জায়গায় বসে হরিনাম সংকীর্তনের আসর। জগন্নাথদেব রথ পৌঁছনোর দিন থেকে নরনারায়ণ সেবার আয়োজন করা হয়। দুপুরে ভাতের সঙ্গে ৭-৮ রকমের তরিতরকারি থাকে সেবার জন্য। সন্ধ্যারতির পরে সকলের জন্য পরমান্নের ব্যবস্থা থাকে। সাত দিন ধরে চলে দর্শনার্থীদের ভোগ বিতরণ।
সঙ্ঘের সম্পাদক সুদাম সখা বৈদ্য, সদস্য অরুণ হালদার, অলোক নস্করেরা বলেন, ‘‘আমাদের এই এলাকার সব থেকে বড় উৎসব রথের মেলা। মেলার প্রস্তুতি শুরু হয় অনেক আগে থেকে। প্রায় ৬-৭ লক্ষ টাকার মতো। জগন্নাথ দেবের রথের রশি টানতে হাজার হাজার ভক্ত ভিড় করেন।