শ্যালো পাম্পের অতিরিক্ত ব্যবহারে নামছে জলস্তর

সকাল থেকে রাত— বিদ্যুৎচালিত শ্যালো পাম্পের মাধ্যমে মাটির গভীরের জল তোলার বিরাম নেই। ফলে ক্রমাগত নামছে জল স্তর। ক্যালেন্ডারে গ্রীষ্মকাল পড়তে দেরি থাকলেও এর মধ্যেই নলকূপ শুকিয়ে যেতে শুরু করেছে।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

মথুরাপুর শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৭ ০১:২৩
Share:

নিরুপায়: শ্যালোর ব্যবহার। নিজস্ব চিত্র।

সকাল থেকে রাত— বিদ্যুৎচালিত শ্যালো পাম্পের মাধ্যমে মাটির গভীরের জল তোলার বিরাম নেই। ফলে ক্রমাগত নামছে জল স্তর। ক্যালেন্ডারে গ্রীষ্মকাল পড়তে দেরি থাকলেও এর মধ্যেই নলকূপ শুকিয়ে যেতে শুরু করেছে। মথুরাপুর ১ এবং ২— এই দু’টি ব্লক জুড়েই এই সমস্যা।

Advertisement

মথুরাপুরের দু’টি ব্লকের প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, কখনও আনাজ, কখনও ধান— সময় অনুযায়ী জমিতে নতুন ফসলের বীজ বোনা হয়। সে জন্য প্রয়োজন হয় প্রচুর জল। স্থানীয় খালগুলি সংস্কারের অভাবে মজতে বসেছে।

আবার কোথাও খাল পাড়ের জমি দখল করে হয়েছে অবৈধ নির্মাণ। ফলে চাষের জল সরবরাহের জন্য ভরসা বিদ্যুৎচালিত শ্যালো পাম্প।

Advertisement

শ্যালো পাম্পগুলি মূলত ভাড়ায় নেন চাষিরা। মথুরাপুর ২ ব্লকের ময়রার মহলের বাসিন্দা শ্যালো পাম্পের মালিক মিলনকান্তি গায়েন জানান, এ বার পাম্পটি বিঘা প্রতি ২ হাজার টাকা ভাড়ায় দিয়েছেন। মথুরাপুর ১ ব্লকের বাসিন্দা অমল বৈরাগী এ বার ৫ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছেন। সে জন্য তিনি জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বিঘা প্রতি ২৫০০ টাকার বিনিময়ে শ্যালো পাম্প ভাড়া নিয়েছেন। ওই চাষির দাবি, ‘‘শ্যালো পাম্প ছাড়া চাষের কোনও উপায় নেই। কারণ, আমাদের এলাকায় খালের মাধ্যমে জলের জোগান নেই।’’

স্থানীয় বাসিন্দা দেবাশিস হালদার, রমেন কয়ালদের অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে গরম কালে যন্ত্রচালিত শ্যালো পাম্প দিয়ে জল তুলে নেওয়া হয়। বিষয়টি প্রশাসনের গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। না হলে পানীয় জলের সঙ্কট বাড়বে।

সমস্যাটি স্বীকার করে মথুরাপুর ১-এর বিডিও মুজিবর রহমান বলেন, ‘‘পাম্পে জল তুলে নেওয়ায় জলস্তর নেমে যাচ্ছে। গরম পড়তে না পড়তেই একের পর এক গ্রামে নলকূপ খারাপ হচ্ছে।’’

মথুরাপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অমিয় গায়েনের আশ্বাস, এই এলাকায় কয়েকটি খালের স্লুইস গেট সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। খালের জল সরবরাহ শুরু হলে শ্যালো পাম্পের ব্যবহার বন্ধ করা হবে।

এলাকার খালগুলি সংস্কার করা হচ্ছে না কেন?

মথুরাপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পুতুল গায়েন জানান, জমি সংক্রান্ত জটিলতার জন্যই খাল সংস্কার করা যাচ্ছে না। তবে শীঘ্রই চাষিদের নিয়ে বৈঠক করে তাঁদের শ্যালো পাম্প ব্যবহার করতে নিষেধ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

কিন্তু নিষেধ করলেই তো হল না। চাষের জলের বিকল্প ব্যবস্থা তো চাই। তার কী হবে, স্পষ্ট উত্তর নেই কারও কাছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন