প্রহৃত: পিঙ্কি। ছবি তুলেছেন নির্মাল্য প্রামাণিক
তিন দিন ধরে না খাইয়ে রাখা হয়েছিল তরুণীকে। খিদে সহ্য করতে না পেরে শ্বশুর বাড়ির লোককে লুকিয়ে রুটি বানিয়ে খেয়েছিলেন বছর চব্বিশের তরুণী। জানতে পেরে বাঁশপেটা করে শ্বশুর।
পালিয়ে মায়ের কাছে চলে এসেছেন পিঙ্কি। সোমবার বাগদা থানায় স্বামী উজ্জ্বল ও শ্বশুর চৈতন্যের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বাগদার হরিহরপুর গ্রামের উজ্জ্বল সাঁতরার সঙ্গে বছর পাঁচেক বিয়ে হয়েছিল বনগাঁর দেবগড়ের বাসিন্দা পিঙ্কির। তিনি ছোটবেলা থেকে কানে প্রায় শুনতে পান না। তাঁর মা টিঙ্কুর দাবি, বিয়েতে খাট-আলমারি- এলইডি টিভি ছাড়াও নগদ টাকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই আরও টাকার দাবিতে শুরু হয় অত্যাচার। উজ্জ্বল ভিনরাজ্যে রাজমিস্ত্রির কাজ করে। সে বাড়ি ফিরে বাবার সঙ্গে মিলে স্ত্রীকে মারধর করত বলে অভিযোগ।
পিঙ্কি বলেন, ‘‘আমার স্বামী অটো কিনবে বলে মায়ের কাছে টাকা এনে দিতে বলত। টাকা এনে দিতে পারতাম না বলে স্বামী- শ্বশুর আমায় মারধর করত।’’ পিঙ্কি জানান, বছর দু’য়েক আগে যমজ কন্যাসন্তান হয় তাঁর। তাদের ভরণপোষণের জন্য মায়ের কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা এনে দিতে বলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সেই টাকা না দিতে পারায় জুটত আরও মার। মাঝেমাঝেই খেতে দেওয়া হত না।
বৃহস্পতিবার থেকে পিঙ্কিকে তিন দিন না খাইয়ে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘‘সহ্য করতে না পেরে রবিবার নিজে রুটি বানিয়ে খেয়েছিলাম। সেটা জানতে পেরে শ্বশুরমশাই বাঁশ দিয়ে আমায় মারধর করে। আমি ভয়ে মায়ের কাছে পালিয়ে আসি। বনগাঁ হাসপাতালে গিয়ে ডাক্তার দেখাই।’’
উজ্জ্বল শনিবারই পৌঁছেছে কেরলে। ফোনে বলে, ‘‘কানে শুনতে পায় না জেনেও ওকে বিয়ে করেছিলাম। ও বাচ্চাদের দেখাশোনাও ঠিক মতো করতে পারে না। তবে মারধর করা হয়নি। আমি বাইরে কাজ করি। সেখান থেকে নিশ্চয়ই মারধর করা সম্ভব নয়।’’