ষাঁড়: এর তাণ্ডবেই নাজেহাল বাসিন্দারা। ইনসেটে, মৃত বৃদ্ধ। নিজস্ব চিত্র
বাড়ির বাইরে পা রাখতে ভয়। দোকানিরা তটস্থ, পসরা সাজাতে পারছেন না রাস্তার ধারে। পাগল ষাঁড়ের তাণ্ডবে ব্যতিব্যস্ত বসিরহাট পুরসভার ১৯-২০ নম্বর ওয়ার্ডের ভ্যাবলা-ট্যাঁটরা এলাকা। রবিবার ষাঁড়ের গুঁতোয় এক বৃদ্ধের মৃত্যুও হয়েছে। তবু কোনও হেলদোল নেই প্রশাসনের, অভিযোগ বাসিন্দাদের।
উপায়ান্তর না দেখে পাড়ার কয়েকজন যুবক যাঁড়কে দড়িদড়া দিয়ে বেঁধে কোনও মতে কব্জা করেছেন। ভ্যানে তুলে বাদুড়িয়ার কাদার বিলে ছে়ড়ে এসেছেন। কিন্তু গ্রামবাসীদের দাবি, ফের ওই ষাঁড় ট্যঁটরার দিকে রওনা দিয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। ফলে আতঙ্কে কমছে না গ্রামবাসীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, ষাঁড়ের গুঁতোয় মৃতের নাম চণ্ডীচরণ বিশ্বাস (৭০)। রবিবার সকালে তিনি বাড়ির সামনে নলকূপে স্নান করছিলেন। ষাঁড়কে বাড়ির ভিতরে ঢুকতে দেখে তাড়া করেন। তাতেই হিতে বিপরীত হয়। খ্যাপা ষাঁড় বৃদ্ধের দিকে তেড়ে এলে গুঁতিয়ে মাটিয়ে ফেলে। দেহ ফালাফালা করে দেয়। তারপরে হেলতে দুলতে এলাকা ছাড়ে।
বাড়ির লোকজন চণ্ডীবাবুকে গুরুতর আহত অবস্থায় বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতার আরজিকরে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই মারা যান তিনি।
বাসিন্দারা জানালেন, ষাঁড়টি যাকে সামনে পেত তাঁকেই গুঁতো মারতে যেত। ভয়ে বাড়ির থেকে বেরোতে পারছিলেন না কেউ। ষাঁড়ের ভয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ হওয়ার জোগাড় হয়েছিল কচিকাঁচাদের। ফের ষাঁড়টি ফিরে আসে কিনা, এই নিয়ে সকলে আতঙ্কে।
এলাকার কাউন্সিলর ইলিয়াস সর্দার বলেন, ‘‘বৃদ্ধের মৃত্যু দুঃখজনক। প্রশাসনের কিছু একটা ব্যবস্থা করা উচিত। গ্রামের মানুষ আতঙ্কে সিঁটিয়ে রয়েছেন।’’
পুরপ্রধান তপন সরকার জানান, ষাঁড়ের গুঁতোয় কয়েকজন জখম হয়েছেন বলে তিনি জানেন। তবে মৃত্যুর খবর শোনেনি। সেই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রশাসনের নানা মহলে এবং বন দফতরকে জানানো হয়েছিল। সকলেই জানিয়েছে, ষাঁড় ধরার পরিকাঠামো তাদের নেই।’’ পুরপ্রধান জানান, ষাঁড়টি ধরে অন্যত্র ছেড়ে আসা হয়েছে। আবার যদি সে ফিরে আসে, তা হলেও একই পদক্ষেপ করা হবে।