ফের বর্ষণে জমল জল, মাথায় হাত চাষিদের 

দুর্যোগ কেটে রোদ উঠলে গাছের গোড়া পচবে বলে জানিয়েছেন কৃষি আধিকারিকেরা। সবে গরমের আনাজ বাজারে উঠতে শুরু করেছিল।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

মন্দিরবাজার শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৯ ০২:৫৯
Share:

চেষ্টা: খেত থেকে বের করা হচ্ছে জল। —নিজস্ব চিত্র।

টানা নিম্নচাপের ধাক্কায় এমনিতেই বেহাল দশা হয়েছিল চাষের। সেই ধাক্কা সামলে ওঠার আগে ফের বর্ষণে আনাজ চাষে বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার চাষিরা। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, নতুন করে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় আনাজ গাছ পচে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল। দুর্যোগ কেটে রোদ উঠলে গাছের গোড়া পচবে বলে জানিয়েছেন কৃষি আধিকারিকেরা। সবে গরমের আনাজ বাজারে উঠতে শুরু করেছিল।

Advertisement

শুরুতেই এমন ধাক্কায় মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের। কী করে ক্ষতি সামলাবেন, তা ভেবে পাচ্ছেন না তাঁরা। কাশীপুর গ্রামের চাষি আকরান গায়েন মঙ্গলবার ভোর থেকে মাঠে বসেছিলেন। তিনি ন’বিঘা জমিতে আনাজ চাষ করেছেন। পাম্পের সাহায্যে আনাজের জমি থেকে জল বের করা হচ্ছিল। বছর চল্লিশের আকরান জানালেন, অন্যান্য বছর এই সময়ে জমিতে পাম্প দিয়ে সেচ দিতে হয়। আর এ বার উল্টোটা করতে হচ্ছে। বললেন, ‘‘আমার সব জমিই জলের তলায়। ১০টা পাম্প দিয়েও জল কমাচে পারছি না। দু’লক্ষ টাকা ঋণ করে চাষ করেছি। কী করে শুধব জানি না।’’ এখই ছবি ধনুরহাট, আচনা, ঘাটেশ্বরা ও কৃষ্ণপুর পঞ্চায়েতের হাজার হাজার বিঘা জমির। এই সময় জমিতে আনাজে পটল, ঝিঙে, লঙ্কা ও ঢ্যাঁড়সের পাশাপাশি বিন, টোম্যাটো চাষ করেছেন। ক্ষতি সেখানেও। এ ছাড়াও, জলে ডুবে রয়েছে বিঘার পর বিঘা সূর্যমুখীর খেত। অনেকেই নিজের জমিতে আনাজের চাষ করেছেন। ১০-১২ হাজার টাকা দিয়ে ইজারা নিয়ে চাষ করেছেন। তাঁরা জানালেন, সার থেকে বীজ, সবই দেনা করে কিনতে হয়। আনাজ বেচে দেনা শোধ হয়।

তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘তৈরি আনাজ গাছ নষ্ট হলে কী ভাবে সামাল দেব?’’ মঙ্গলবার সকালে দেখা গেল, মাঠের পর মাঠ আনাজের জমিতে কোথাও কোথাও হাঁটু সমান জল। অধিকাংশ গাছই হেলে পড়েছে। শিকড়ে পচন ধরে নেতিয়ে পড়ছে বেশ কিছু গাছ। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, আবহাওয়া মেঘলা বলে গাজ সতেজ বলে মনে হচ্ছে। রোদ উঠলে গোড়া পচে গাচ মরে যাবে। এত বেশি সময় জলে থাকায় সার বা ছত্রাকনাশক দিয়েও কাজ হবে না। ঘাটেশ্বরা পঞ্চায়েতের আঁকড়া বেনিয়া গ্রামের চাষি মনিরুল মোল্লা, বিশ্বজিৎ হালদার, জাহাঙ্গির মোল্লারা জানালেন, গত ২০-২৫ বছরে এমন সঙ্কটে তাঁরা কখনও পড়েননি। মন্দিরবাজার ব্লকের কৃষি আধিকারিক মহম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের নামের তালিকা তৈরি করে তা জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হবে। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন