হাসপাতালেই পড়ে আবর্জনা

ডেঙ্গির প্রকোপ কাকদ্বীপে

স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরে কাকদ্বীপ ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। রবিবার সকালে ময়নাপাড়া গ্রামে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে শ্যামল মাইতির মৃত্যু হয়।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৪০
Share:

যত্রতত্র: কাকদ্বীপ হাসপাতালে পড়ে আর্বজনা। নিজস্ব চিত্র

ফের আরও এক মহিলার ডেঙ্গি ধরা পড়ল কাকদ্বীপের অশোকনগর পূর্ব ময়নাপাড়া গ্রামে।

Advertisement

বছর ছত্রিশের আরতি দাস নামে ওই মহিলার রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গিয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁকে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে কাকদ্বীপ হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। কাকদ্বীপের বিএমওএইচ গৌড়হরি মণ্ডল বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্ত ৬ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। প্রতিটি পঞ্চায়েতের স্বাস্থ্যকর্মীরা দল বেঁধে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে জ্বরের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন। গ্রামের কেউ জ্বরে আক্রান্ত হলেই তাঁর রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। মঙ্গলবার আরও এক জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। এখনও পর্যন্ত এলাকায় প্রায় ৮৫ জনের ডেঙ্গি হয়েছে।’’

স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরে কাকদ্বীপ ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। রবিবার সকালে ময়নাপাড়া গ্রামে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে শ্যামল মাইতির মৃত্যু হয়। এরপরেই নড়েচড়ে বসে স্বাস্থ্য দফতর। নিয়ম করে প্রতিটি গ্রামে ঘুরছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। কারও জ্বর দেখলেই রক্ত সংগ্রহ করছেন। পরীক্ষার জন্য তা কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।

Advertisement

তবে এতে খুশি নন গ্রামবাসীরা। মঙ্গলবার দুপুরে অশোকপুর পূর্ব ময়নাপাড়ায় গিয়েছিলেন স্বাস্থ্যকর্মী সাথী ঘোষ কয়াল। তাঁকে কাছে পেয়ে গ্রামবাসীরা ক্ষোভ উগড়ে দেন। কল্পনা ঠিকাদার, সমর মাইতিরা জানান, চারদিকে আগাছা-জঙ্গলে ভরা। পুকুরে আবর্জনা, কচুরিপানা। তা থেকেই মশার উৎপাত বাড়ছে। দিন-রাত মশারি টাঙিয়ে থাকতে হয়। নদীর ধারে নিম গাছের পাতা জ্বালিয়ে মশা তাড়াতে হয়। মশার উপদ্রবে টেকা দায় হয়ে উঠেছে।

তাঁদের দাবি, স্বাস্থ্য দফতর বা পঞ্চায়েত থেকে আগে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয় না। ছড়ানো হয় না ব্লিচিং পাউডারও। এলাকাবাসীর কথায়, ‘‘একাধিকবার পঞ্চায়েতকে বলা হয়েছে। কিন্তু কোনও কাজ হয় না।’’ গ্রামবাসীরা জানান, কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতাল রবিবার হলেই ডাক্তার থাকে না। রোগী দেখার কেউ থাকেন না। শুধু তাই নয়, সারা হাসপাতাল চত্বরও মশার আঁতুর ঘর। যত্রতত্র পড়ে রয়েছে ডাবের খোলা। নিকাশি নালায় নোংরা জল জমে রয়েছে। এখানে ওখানে আবর্জনার স্তূপ। ফলে হাসপাতালও নিরাপদ নয়।

এ বিষয়ে কাকদ্বীপের অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অভিরূপ মণ্ডল বলেন, ‘‘হাসপাতালে নিকাশি সমস্যা রয়েছে। তা সমাধানের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আবর্জনার বিষয় নিয়ে শীঘ্রই আলোচনা করে সমাধান করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন