ঘরে আলো আছে। কিন্তু তা জ্বলে না। জ্বললেও টিম টিম করে। পাখা চললে তাও না চলার মতো। মাসের পর মাস এমনই অবস্থার মধ্যে দিন কাটাতে হয় কুলতলি এলাকার বাসিন্দাদের।
এলাকায় লো-ভোল্টেজের কারণে নাজেহাল মানুষ। প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
কুলতলি জামতলা বিদ্যুৎ সাব স্টেশনের অধীনে রয়েছে নলগোড়া, বাইশহাটা, মণিরতট ও চুপড়িঝাড়া পঞ্চায়েত। এখানে রয়েছে বেশ কিছু ব্যাঙ্ক, প্রাথমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুল। ফলে বিদ্যুতের প্রয়োজন এলাকায় সবসময়। কিন্তু পরিষেবার এই হাল হওয়ায় কোনও কাজই সুষ্ঠ ভাবে হয় না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। স্কুল, অফিসগুলিতে জেনারেটর দিয়ে কম্পিউটার চালাতে হয় বলে কর্মীরা জানান।
জামতলা সাব স্টেশনের সহকারি বাস্তুকার হরিসাধন নস্কর বিদ্যুৎতের সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘‘ওই এলাকায় লো-ভোল্টেজ ও লোডশেডিং এর সমস্যা মেটানোর জন্য খুঁটি পোতা ও ১১ কেভি লাইনের কাজ শুরু হয়েছে। বারুইপুর ডিভিশন্যাল ম্যানেজারের অধীনে কাজ চলছে। আশা করা যায় দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।’’ নলগোড়াধাম বৈকুন্ঠ বিদ্যালয় এলাকায় বড় এবং ভাল স্কুল হিসেবে পরিচিত। পড়ুয়া প্রায় দেড় হাজার জন। স্কুলের মধ্যেই রয়েছে হস্টেল। বছর দশেক আগে ওই স্কুলে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন প্রায়ই লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজে জেরবার স্কুল কর্তৃপক্ষ। এই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবরেটরি কাজ করা যাচ্ছে না। আবাসনে পাম্প চালিয়ে জল তোলা যায় না। ছাত্রীদের আবাসনে জেনেরেটার আলোর ব্যবস্থা আছে। ছাত্রদের তাও নেই। ফলে কুপির আলোয় তাদের পড়াশোনা করতে হয়। ছাত্রছাত্রীরা জানায়, যেমন আলো থাকে তাতে তো কোনও জিনিস ভাল ভাবে চোখেই দেখা যায় না। পড়াশোনা তো দূরের কথা। কুপির আলোতেই কাজ চালাতে হয়। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত প্রায় ৩০ বার লোডশেডিং হয়। কিন্তু বিদ্যুৎ বিল আসে প্রায় পনেরো থেকে কুড়ি হাজার টাকার মতো। গরমের সময়ে গলদঘর্ম অবস্থায় ক্লাস করতে হয়। এই সমস্যা যে শুধু পড়ুয়াদের তা নয়। অফিস কর্মীদেরও একই অবস্থা। বাড়িতে অসুস্থ কেউ থাকলে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন বলে এলাকাবাসীরা জানান।
প্রশাসনকে জানালে মিলছে শুধুই আশ্বাস। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। নলগোড়া পঞ্চায়েতের প্রধান গোউল নস্কর বলেন, ‘‘বিদ্যুৎতের সমস্যার জন্য প্রতিনিয়ত পঞ্চায়েতের কাজেরও সমস্যা হচ্ছে। কম্পিউটার চালানো যাচ্ছে না। ফলে সমস্ত কাজ বন্ধ থাকছে।’’