প্রতীকী চিত্র।
তেলেনিপাড়া ঘাটে দুর্ঘটনার পর রাজ্যের সব ঘাটগুলিতে লাইফ জ্যাকেট, ড্রপগেট তৈরি করার কথা হয়েছিল। এক সপ্তাহ আগে জেলায় প্রশাসনিক বৈঠকে এসে জেলায় মুখ্যামন্ত্রীও ঘাটগুলির নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলেন। কিন্তু তার পরেও কাকদ্বীপ মহকুমার বেশ কয়েকটি বড় ঘাটে সে সবের দেখা নেই। কোথাও লাইফ জ্যাকেট দেওয়া হলেও সেগুলি পরছেন না কেউই। শুধু তাই নয়, নিরাপত্তার জন্য বেশ কিছু ভুটভুটিতে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার সংখ্যা বেঁধে দিয়েছে সরকার। তা মানা হচ্ছে কি না, দেখার জন্য কোথাও নজরদারি নেই বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
ঢিলেমি কেন? জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘অনেকগুলি ঘাটে জ্যাকেট দিতে হবে। ড্রপগেটও করতে হবে। তা করতে একটু সময় লাগছে। ইতিমধ্যেই বড় কয়েকটি ঘাটে সে সব দেওয়া শুরু হয়েছে।’’
অন্য সময় ভুটভুটি বা নৌকায় যাতাযাত করাও বেশ ঝুঁকির। বর্ষায় সময় সেই ঝুঁকি আরও বাড়ে। তাই যাত্রীদের দাবি, নিরাপত্তার বিষয়গুলি দ্রুত দেখা হোক। নামখানা থেকে কুলপি যাতায়াত করেন ব্যবসায়ী প্রীতম মাইতি। তাঁকে নামখানা ঘাট পেরোতে হয় সপ্তাহে ৪ দিনই। অথচ হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদীর উপর এই নামখানা ও নারায়ণপুর ঘাটের কোনওটিতেই এখনও লাইফ জ্যাকেটের দেখা মেলেনি। প্রীতমবাবুর কথায়, ‘‘টিভিতে দেখেছিলাম অনেক কিছু হবে। কিন্তু কোনও পরিবর্তন চোখে পড়েনি।’’
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৭৭টি নৌকায় যাত্রী তোলার উর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেগুলির বেশিরভাগই দূরপাল্লার নৌকা। কিন্তু নারায়ণপুর-নামখানা, পাথরপ্রতিমা-বনশ্যামনগর-রামগঙ্গা, হারউড পয়েন্ট থেকে ঘোড়ামারা –এই সব কম দূরত্বের রুটগুলিতে নৌকায় লোক তোলার উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ এখনও আনা হয়নি। রাতে এখনও পাথরপ্রতিমা ঘাটে টর্চ দিয়েই যাত্রী ওঠানো-নামানো হয়। তবে পাথরপ্রতিমা-রামগঙ্গা ঘাটে ড্রপগেট বসেছে।
গোবিন্দ দাস নামে ঘাটের এক ইজারাদার বলেন, ‘‘যাত্রী ওঠানো-নামানো নিয়ে প্রশাসনের তরফে নোটিস দেওয়া হয়েছে। আমরা নজরদারি করছি। তবে নৌকোর গায়ে রেড মার্ক বা বিপদসীমা চিহ্নিত করে দেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে আমাদের কিছু বলা হয়নি। লাইফ জ্যাকেটও আমরা এখনও পাইনি।’’
সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা বলেন, ‘‘বড় ঘাটে যাত্রী নিরাপত্তার বিষয় দেখে পরিবহণ দফতর। তবে ছোট ঘাটগুলির কোনওটা পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ দেখে। বড় ঘাটগুলির মতো ছোট ঘাটের ক্ষেত্রেও যদি রাজ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত কিছু নির্দেশিকা দেয়, আমরা তা কার্যকর করব।’’