হাতে-হাতে: পড়ুয়াদের হাতে চেক তুলে দিচ্ছেন সুশান্ত। নিজস্ব চিত্র
টাকা নিয়ে ভর্তির অভিযোগে একদিকে যখন উত্তাল গোটা রাজ্য, তখন চাঁদা তুলে দুই পড়ুয়ার কলেজে ভর্তির খরচ জুগিয়ে দৃষ্টান্ত গড়েছে হিঙ্গলগঞ্জ কলেজের তৃণমূল ছাত্র সংসদের পড়ুয়ারা।
সংবাদমাধ্যমে সেই খবর জেনে পড়ুয়াদের আর্থিক সাহায্য করতে এগিয়ে এলেন দমদম ক্যান্টনমেন্টের বাসিন্দা সুশান্ত ঘোষ।
বৃদ্ধ মানুষটি বৃহস্পতিবার নিজেই আসেন হিঙ্গলগঞ্জ কলেজে। যে প়ডুয়ারা গরিব ছেলেমেয়েদের পাশে থাকার জন্য চাঁদা তুলছে, তাঁদের হাতে চেক তুলে দেন সুশান্ত।
এক সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঘোষকের কাজ করতেন বৃদ্ধ মানুষটি। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘আত্মীয়-বন্ধুদের থেকে আমিও কিছু টাকা তুলেছি। যে সব পড়ুয়ারা টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারছে না, তাদের পাশে থাকার জন্য চেষ্টা করেছি।’’ তাঁর এবং ছাত্রদের জোগাড় করা টাকায় আরও ৭ জন ভর্তি হতে পেরেছে বলে কলেজ সূত্রের খবর। ছাত্র সংগঠনের পক্ষে সঞ্জয় পাল, মুনমুন গুপ্ত, অঞ্জন ঢালিরা বলেন, ‘‘একজন পড়ুয়াও যাতে টাকার অভাবে ভর্তি হতে না পেরে ফিরে যায়, সে জন্যই আমাদের এই উদ্যোগ।’’
ছাত্রছাত্রীদের প্রশংসা করেছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সামিম ভড়়। সেই সঙ্গে সুশান্তর ভূমিকারও তারিফ করেন তিনি। বলেন, ‘‘কলকাতা থেকে এতটা পথ পেরিয়ে বয়স্ক মানুষটি এসেছেন সাহায্য নিয়ে। বিষয়টি আমাদের মুগ্ধ করেছে।’’
হিঙ্গলগঞ্জ কলেজে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে বহু দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েরা ভর্তি হতে আসে। অধিকাংশ বাড়িতে সংসার চলে দিনমজুরি করে, মিন ধরে বা ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করে। এ দিন ভর্তি হওয়া আজুফা খাতুনের বাবা বিড়ি শ্রমিক। আফুজার কথায়, ‘‘খুব কষ্টে সংসার চালান বাবা। এই সাহায্যটুকু না পেলে আমার উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন অধরাই থেকে যেত।’’