তৃণমূলের চার কাউন্সিলর দাঁড়াচ্ছেন না গোবরডাঙায়

গোবরডাঙা পুরসভা ভোটের জন্য মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র জমা দিলেন তৃণমূল প্রার্থীরা। যদিও পুরসভার ১৭টি আসনের মধ্যে এ দিন ১৬টি ওয়ার্ডে প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী কে হবেন, তা নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় ওই ওয়ার্ড থেকে কোনও প্রার্থী মনোনয়ন দেননি। দলীয় সূত্রের খবর, বুধবার ওই ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেবেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোবরডাঙা  শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৫ ০১:০১
Share:

২ নম্বর ওয়ার্ডের বাম প্রার্থী চন্দনা সাহা।

গোবরডাঙা পুরসভা ভোটের জন্য মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র জমা দিলেন তৃণমূল প্রার্থীরা। যদিও পুরসভার ১৭টি আসনের মধ্যে এ দিন ১৬টি ওয়ার্ডে প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী কে হবেন, তা নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় ওই ওয়ার্ড থেকে কোনও প্রার্থী মনোনয়ন দেননি। দলীয় সূত্রের খবর, বুধবার ওই ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেবেন।

Advertisement

২০১০ সালের পুর নির্বাচনে ১৭টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ১১টি, কংগ্রেস ১টি ও সিপিএম ৫টি আসন। সম্প্রতি কংগ্রেস কাউন্সিলর গোবিন্দলাল মুখোপাধ্যায় তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় আসন সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২টি। এ বার চার জন কাউন্সিলরকে দল প্রার্থী করেনি। দলের তরফে গোবরডাঙার পর্যবেক্ষক অজিত সাহা বলেন, “যে চার জন কাউন্সিলর এ বার প্রার্থী হতে পারেননি, তাঁদের মধ্যে তিন জনের আসন সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছে। বাকি এক জন স্বেচ্ছায় দাঁড়াতে চাননি। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী কে হবেন, তা ঠিক করার দায়িত্ব আমরা জেলা নেতৃত্বের হাতে ছেড়ে দিয়েছি।”

যে চার জন কাউন্সিলর প্রার্থী হননি, তাঁরা হলেন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রশান্ত রায় বিশ্বাস, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বর্ণালী বিশ্বাস, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের জ্যোত্‌স্না গোলদার ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শম্ভু মণ্ডল। দলীয় সূত্রের খবর, প্রশান্তবাবু স্বেচ্ছায় এ বার প্রার্থী হতে চাননি।

Advertisement

কিন্তু জ্যোত্‌স্নাদেবী নিজে দাঁড়াতে ইচ্ছুক থাকলেও দল তাঁকে প্রার্থী করেনি। ১০ নম্বর ওয়ার্ডটি এ বার সাধারণ হিসাবে সংরক্ষিত। ফলে জ্যোত্‌স্নাদেবীকে দল মনে করলেই প্রার্থী করতে পারতেন বলে কর্মীদের বিশ্বাস। ঠিক কী কারণে জ্যোত্‌স্নাদেবীকে এ বার প্রার্থী করা হল না, তার কারণ নিয়ে দলের একাংশের মত, গতবার উনি আসন সংরক্ষণের ফলে টিকিট পেয়েছিলেন। এ বার ওই ওয়ার্ডে যিনি দাঁড়িয়েছেন, সেই বিশ্বনাথ চক্রবর্তীর জনপ্রিয়তা ওয়ার্ডের মানুষের কাছে বেশি।

উল্লেখযোগ্য যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন, তাদের মধ্যে আছেন পুর চেয়ারম্যান সুভাষ দত্ত, তিনি ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হয়েছেন। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন এলাকার প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা শঙ্কর দত্ত। তিনি চেয়ারম্যানের ভাই। ভাইস চেয়ারম্যান অসীম তরফদার এ বার নিজের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডটি মহিলা সংরক্ষিত হওয়ায় প্রার্থী হয়েছেন ১৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। ১৩ নম্বরে প্রার্থী হয়েছেন চিত্তলেখা দত্ত। বর্তমান কাউন্সিলরদের মধ্যে প্রার্থী হয়েছেন সবিতা দাস, সবিতা ভট্টচার্য, গোবিন্দ মণ্ডলের মতো ৭ জন কাউন্সিলর। নতুন প্রার্থীদের মধ্যে আছেন বাসন্তী ভৌমিক চক্রবর্তী, চম্পা চক্রবর্তী, রত্না বিশ্বাস চৌধুরী।

মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সাহা (একেবারে বাঁ দিকে)।

৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কেন কোনও প্রার্থী এ দিন মনোনয়ন জমা দিলেন না?

দলীয় সূত্রের খবর, ওই ওয়ার্ডে প্রার্থী হিসাবে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দাবি উঠেছে বুলি দত্তের। বুলিদেবী আবার শঙ্কর দত্তের স্ত্রী। ফলে একই পরিবার থেকে তিন জন প্রার্থী হয়ে যাচ্ছে। দলের জেলা নেতৃত্ব চাইছেন না, একই পরিবার থেকে এত জনকে প্রার্থী করতে। বনগাঁর ক্ষেত্রে অবশ্য বিদায়ী পুরপ্রধান জ্যোত্‌স্না আঢ্য ও তাঁর স্বামী শঙ্কর আঢ্যকে টিকিট দিয়েছে দল। জেলা তৃণমূলের সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “ওই ওয়ার্ডে প্রার্থী কে হবেন, তা ঠিক করবেন শঙ্কর দত্ত।”

অন্য দিকে, বনগাঁ পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে মঙ্গলবার মনোনয়ন জমা দিয়েছেন জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি রতন ঘোষের স্ত্রী রত্না ঘোষ। সোমবার তৃণমূলের ২১ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিলেও ৫ নম্বর ওয়ার্ডটি বাকি ছিল। এ দিন সকালে ওয়ার্ড থেকে শ’দুয়েক কর্মী সমর্থককে নিয়ে রতনবাবু মিছিল করে মহকুমাশাসকের দফতরে আসেন। রতনবাবু বলেন, “দলের অনুমতি নিয়েই আমার স্ত্রী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।”

৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী রত্না ঘোষ চলেছেন মনোনয়ন জমা দিতে। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

ওই ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থীর দাবিদার ছিলেন তৃণমূল কর্মী মনোরঞ্জন বিশ্বাস ও রতনবাবু নিজে। কিন্তু সরকারি চাকরি ছাড়ার সময়সীমা নিয়ে আইনি জটিলতার কারণে রতনবাবু প্রার্থী হতে পারেননি। পরিবর্তে তাঁর স্ত্রীর নাম উঠে আসে।

অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার জন্য সোমবার শাসক দল ২৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০টি ওয়ার্ডে মনোনয়ন জমা দিয়েছিল। মঙ্গলবার বাকি তিনটি ওয়ার্ডের মধ্যে দু’টি ওয়ার্ডে (১৫ ও ২১ নম্বর) কৃষ্ণা চক্রবর্তী ও মিলন মল্লিক মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। বাকি ১ নম্বর ওয়ার্ডে বুধবার মনোনয়ন জমা পড়বে বলে দলীয় সূত্রে জানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন