দুর্ঘটনার-পর: হাসপাতালের পথে। নিজস্ব চিত্র
গ্যাস বেলুনের সিলিন্ডার ফেটে জখম হলেন ৩ জন। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বকখালিতে। পুলিশ জানিয়েছে, জখমেরা স্থানীয় বাসিন্দা। দু’জন এসএসকেএমে চিকিৎসাধীন। একজন ডায়মন্ড হারবারের নার্সিংহোমে ভর্তি।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব অমরাবতীর যুবক মানিক মণ্ডল দাদু আশুতোষ ধারার সঙ্গে সোমবার বকখালি পুলিশ ফাঁড়ির সামনের চাতালে সিলিন্ডার নিয়ে গ্যাস বেলুন বিক্রি করছিলেন। কোনও পর্যটক ছিলেন না সেখানে। শৌচাগারের সাফাইকর্মী শেখ আব্দুল মান্নান একটু দূরে দাঁড়িয়েছিলেন। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দে সিলিন্ডার ফাটে। বিস্ফোরণের উৎস বুঝতে না পেরে ছুটোছুটি শুরু করেন বহু পর্যটক। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মানিকের ডান পা হাঁটুর নীচ থেকে ছিটকে গিয়ে কয়েক হাত দূরে পড়েছে। আশুতোষের পায়েও গভীর ক্ষত। তিনজনকে দ্বারিকনগর হাসপাতাল থেকে ডায়মন্ড হারবারে আনা হয়। ডায়মন্ড হারবার সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে এলে স্ট্রেচার দিতে দেরি হয় বলে অভিযোগ রোগীর পরিবারের। চিকিৎসকেরা মানিক এবং আশুতোষবাবুকে পিজিতে স্থানান্তরিত করেন। মানিকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।
বেলুন বিক্রেতারা জানান, গ্যাস বেলুনে সাধারণত হিলিয়াম বা হাইড্রোজেন গ্যাস ভরা হয়। হিলিয়াম গ্যাস নিষ্ক্রিয় বলে নিরাপদ। কিন্তু হিলিয়ামের দাম বেড়েছে বলে হিলিয়াম বা হাইড্রোজেন কোনওটাই ভরা হচ্ছে না ইদানীং। বদলে, কারবাইড জলে ভিজিয়ে কম খরচে অ্যাসিটিলিন গ্যাস তৈরি করে তা দিয়ে বেলুন ফোলানোর কাজ চলছে। তা করতে গিয়েই বিপদ ডেকে আনছেন অনেকে।
কাকদ্বীপ সুন্দরবন আদর্শ বিদ্যামন্দিরের রষায়ণের শিক্ষক অমল করণ বলেন, ‘‘কারবাইড জলে ভিজিয়ে তা থেকে অ্যাসিটিলিন তৈরি করা হয়। যা দাহ্য। সিলিন্ডারে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে না ভরলে বিস্ফোরণের আশঙ্কা থাকে।’’
সিলিন্ডার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জানা গেল, কারবাইড জলে ভিজিয়ে অ্যাসিটিলিন তৈরি করার প্রক্রিয়ায় অ্যালুমিনিয়াম অনুঘটক হিসেবে দেওয়া হয়। তাতে দ্রুত গ্যাস তৈরি হলেও সিলিন্ডারের তাপমাত্রা অনেক বেড়ে গিয়ে ভিতরে মারাত্মক চাপ তৈরি করে। বিস্ফোরণ হওয়া সিলিন্ডারটি কোথায় তৈরি করা হয়েছিল, কোথা থেকে গ্যাস ভরা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।