এই পথেই পাচার হয় সোনা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
পান্তাভাত ঘেঁটে বেরোল সোনার বিস্কুট।
অ্যালুমিনিয়ামের টিফিন ক্যারিয়ারে ভাত-তরকারি নিয়ে চাষের কাজে যান যে চাষি, তাঁকেও এ বার লাগানো হচ্ছে সোনা পাচারের কাজে। দুই চাষির টিফিন ক্যারিয়ার থেকে সোনার বিস্কুট উদ্ধারের পরে এই তথ্য হাতে এসেছে পুলিশ ও বিএসএফের কাছে। সোনা পাচারের হাজারটা ফন্দি-ফিকিরের মধ্যে এই ঘটনা সত্যিই অভিনব, জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা।
সোমবার বাগদার বাঁশঘাটা ক্যাম্পের জওয়ানেরা দুই চাষির ফেলে যাওয়া টিফিন ক্যারিয়ার থেকে ১৬টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার করেছে। যার মূল্য প্রায় ৫৩ লক্ষ টাকা। বিএসএফ জানিয়েছে, জওয়ানদের নজরদারির কথা চাষিরা জানতে পারায় শেষ মুহূর্তে পালিয়ে যায়। তবে তাদের পরিচয় জানা গিয়েছে। তারা কাঁটাতারের বাইরে জমিতে কাজ করতে গিয়েছিল। সেখানেই বাংলাদেশ থেকে কেউ এসে সোনার বিস্কুট পৌঁছে দেয়। তারা টিফিন কৌটো করে বিস্কুট এ পারে আনছিল।
সীমান্তের জিরো পয়েন্ট থেকে কয়েক’শো মিটার ছেড়ে বসানো হয়েছে কাঁটাতারের বেড়া। জিরো পয়েন্ট ও কাঁটাতারের মাঝে রয়েছে কৃষি জমি। এ দেশের চাষিরা বিএসএফের অনুমতি নিয়ে ওই এলাকায় নিজেদের জমিতে কাজ করতে যান। সেখানে বিএসএফের নজরদারি কম থাকে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় মানুষ। আর এই সুযোগটাকেই কাজে লাগাতে এ বার তৎপর হয়েছে পাচারকারীরা।
আরও পড়ুন: বাড়ছে শরীরে লুকিয়ে মাদক পাচার, উদ্বেগ
বিএসএফ জানায়, বাংলাদেশ থেকে লোকজন বিনা বাধায় সেখানে আসতে পারে। তারাই চাষিদের টাকার লোভ দেখিয়ে এ দেশে সোনা পাচার করাচ্ছে। চাষিরা টিফিন বক্সের মধ্যে করে বা লুঙ্গির ভাঁজে বিস্কুট নিয়ে আসছে। আগে থেকে তথ্য না থাকলে যা আটক করা কার্যত অসম্ভব। তবে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিএসএফ।
কেন এত চাহিদা সোনার বিস্কুটের?
গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, ঢাকার বড় বাজারের সঙ্গে কলকাতার বাজারের একটি চক্রের যোগাযোগ রয়েছে। বিভিন্ন হাত ঘুরে ঢাকা থেকে সোনা আসে কলকাতায়। এক গোয়েন্দা কর্তার কথায়, ‘‘ঢাকা থেকে এক কিলো সোনার বিস্কুট কলকাতায় পৌঁছে দিতে পারলে লাভ হয় ১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকার মতো। তাই সোনার পাচার বাড়ছে।’’
বিএসএফ জানিয়েছে, ২০১৮ সালে বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ার সীমান্ত এলাকা থেকে এখনও পর্যন্ত ১২ কেজি ৪৫৮ গ্রাম সোনা উদ্ধার হয়েছে। যার মূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা। গ্রেফতার হয়েছে ৫ জনকে।