স্কুলশিক্ষার সার্বিক উন্নয়নে রাজ্য সরকারের সদিচ্ছার কোনও অভাব না থাকলেও তা পণ্ড হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন সময়ে বের হওয়া পরস্পর বিরোধী কিছু নির্দেশিকায়— এ রকমই অভিযোগ রাজ্যের প্রধান শিক্ষক সংগঠনের। শুক্রবার কাকদ্বীপে সংগঠনের বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম দিন এ সব অভিযোগ উঠে এসেছে। শিক্ষকদের দাবি, তার জেরে মার খাচ্ছে গুণগত শিক্ষার পরিবেশ।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নীহারেন্দু চৌধুরী বলেন, ‘‘একই বিষয়ের উপরে বিভিন্ন সময়ে একাধিক নির্দেশিকা, সেগুলির অস্পষ্টতা, সার্ভিস কমিশনের প্রক্রিয়ার ত্রুটি, আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা বহু ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। এ সবের জন্য অনেকটা প্রভাব পড়ছে শিক্ষায়।’’ শিক্ষকদের দাবি, লম্বা ছুটির সময় থেকে শুরু করে স্কুলে শিক্ষকেরা কতক্ষণ থাকবেন, এ সব নিয়ে সম্প্রতি কয়েকবার নানা রকমের নির্দেশ বেরিয়েছে। মিড ডে মিল, ফল প্রকাশ, সিলেবাস রিভিউ— সব নিয়েই এ রকম বিভ্রান্তিকর নির্দেশের সম্মুখীন হতে হচ্ছে রাজ্যের প্রায় সাড়ে ১২ হাজার স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের।
পরিচালন কমিটির গঠন প্রক্রিয়া, সেখানে কারা থাকবেন— এ সব নিয়ে তীব্র অভিযোগ তোলা হয়েছে। সংগঠনের নেতাদের দাবি, বহু স্কুলের পরিচালন সমিতিতে এখনও এ রকম প্রতিনিধি রয়ে গিয়েছেন, যাঁরা অন্যত্র কাজ করেন। তা করা যাবে না বলে নির্দেশিকা রয়েছে সরকারের। তার জেরে বিভিন্ন স্কুলের পরিচালন সমিতিতে নিত্য অবব্যস্থায় অশান্তি লেগে রয়েছে। প্রায় আড়াই হাজার প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। এ সব নিয়ে নিয়মিত ভাবে স্কুলের পরিদর্শন হয় না জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতরের তরফে, উঠে এসেছে এমন অভিযোগও।
পাঠ্যক্রমে পুরনো বানানবিধি চালু করা, মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং শিশুর যত্নকালীন ছুটি নিয়ে বিভ্রান্তির অবসান, দ্রুত শূন্যপদ পূরণ করার মতো ২৩ দফা দাবি পেশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। পাশফেল অবিলম্বে ফের চালু করার দাবি ছাড়াও ভুলত্রুটিপূর্ণ সিলেবাস রিভিউ করার জন্য অবিলম্বে কমিটি গড়ার দাবি আচে প্রতিবেদনে।
সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা, প্রাক্তন মন্ত্রী তথা শিক্ষাবিদ রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষকদের দাবিদাওয়া প্রসঙ্গে মন্টুরামবাবু বলেন, ‘‘ঋণের বোঝা মাথায় নিয়েও মমতা সরকার শিক্ষার উন্নয়নে অনেকটাই করে চলেছে। দাবিদাওয়াগুলিও পূরণ হবে।’’ রবিরঞ্জনবাবু জোর দেন শিক্ষার গুণগত মান বাড়ানোর উপরে।