কোনও স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি স্কুলের শিক্ষক। কেউ কাজ করেন জেলা পরিষদে। নিজের অফিসের কাজকর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকায় তাঁরা স্কুলের ব্যাপারে যথেষ্ট সময় দিতে পারেন না বলে অভিযোগ। রাজ্য সরকার একটি নির্দেশে কিছু দিন আগে জানিয়েছে, অন্য পদে কর্মরত কাউকে স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি পদে রাখা যাবে না। কিন্তু দক্ষিণ ২৪ পরগনার অনেক স্কুলেই এমন সভাপতিরা রয়ে গিয়েছেন।
কিছু দিন আগে নামখানার মুরারীমোহন হাইস্কুলে পরিচালন সমিতির সভাপতিকে অপসারণ করেছেন স্কুল পরিদর্শক। কিন্তু তাতে ওই স্কুলের অভিভাবকরা উল্টে সরব হন এই দাবিতে, ব্লকের অন্যান্য স্কুলগুলির পরিচালন সমিতিতেও অনেক সভাপতি চাকরি-বাকরি করেন। তাঁদের তা হলে সরানোর হবে না কেন? সেই প্রক্রিয়া অবশ্য শুরু হয়েছে বলে দাবি করেছেন জেলা শিক্ষা দফতরের এক কর্তা।
২০১৫ সালের শেষ দিকে স্কুল শিক্ষা দফতর ওই নির্দেশ দিয়েছিল। গত বছর জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতর থেকে স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের নোটিস পাঠিয়ে জানাতে বলা হয়েছিল, কোথায় কোথায় এমন সভাপতিরা আছেন। বেশ কিছু স্কুল তথ্য দিলেও এখনও অনেক স্কুলই তা দেয়নি বলে শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর।
নামখানার রাজনগর বিশ্বম্ভর হাইস্কুলের সমিতির সভাপতি পড়ান একটি স্কুলে। পাতিবুনিয়া উপেন্দ্র বিদ্যাপীঠেও যিনি সবাপতি, তিনি চাকরি করেন। কাকদ্বীপের বীরেন্দ্র বিদ্যাপীঠেও সভাপতি হিসেবে রয়েছেন তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্য। তিনি একটি স্কুলের শিক্ষকও।
বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তুলেছেন প্রধান শিক্ষকদের একটি অংশও। প্রধান শিক্ষক সংগঠনের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা নেতা শ্রীদামচন্দ্র জানা বলেন, ‘‘যে সমস্ত স্কুলগুলিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের প্রভাব রয়েছে, বা যে সব স্কুল শিক্ষা প্রশাসনের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক বজায় রেখে চলে, তাদের পরিচালন সমিতিতে এমন সভাপতি রয়ে গিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে না।’’ রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে এমন পরিস্থিতি বলে অবশ্য মানতে চাননি জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বাদলকুমার পাত্র। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা স্কুলের কাছে তথ্য চেয়েছিলাম, যে সমস্ত স্কুল দিয়েছে, সেগুলির কয়েকটিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু জেলার প্রায় ৬০০ স্কুল রয়েছে। এক বছরে তো সব খতিয়ে দেখা সম্ভব নয়। তবে বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে সমীক্ষার কাজ চলছে।’’ তবে তথ্য হাতে এলেই ওই সব সভাপতিকে পরিচালন সমিতি থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।