ভেসেলে চালু করা হচ্ছে জিপিএস নজরদারি ব্যবস্থা

সপ্তাহ দু’য়েক আগেই কুয়াশার মধ্যে ভাটার জেরে মুড়িগঙ্গার চরে আটকে পড়ে বড় যাত্রীভেসেল। পরে নৌকো নিয়ে গিয়ে যাত্রীদের উদ্ধার করতে হয়

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:২১
Share:

কুয়াশা-মাখা: এ ভাবেই আটকে পড়ে ভেসেল। নিজস্ব চিত্র

গঙ্গাসাগর মেলায় উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভেসেলে জিপিএস নজরদারি ব্যবস্থা চালু করছে জেলা প্রশাসন। মেলার সময় মুড়িগঙ্গায় প্রতিটি যাত্রিবাহী বার্জ এবং ভেসেলের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসেব থাকবে এলইডি স্ক্রিনে। এর নাম দেওয়া হচ্ছে ‘ভেসেল ইনফরমেশন সিস্টেম।’ এ বারই প্রথম এটি চালু করা হচ্ছে।

Advertisement

সপ্তাহ দু’য়েক আগেই কুয়াশার মধ্যে ভাটার জেরে মুড়িগঙ্গার চরে আটকে পড়ে বড় যাত্রীভেসেল। পরে নৌকো নিয়ে গিয়ে যাত্রীদের উদ্ধার করতে হয়। তখনই দাবি উঠেছিল, কেন ভেসেলগুলিতে জিপিএস বসছে না। গঙ্গাসাগর মেলার সময় এরকম কিছু হলে বিপদ বাড়তে পারে। সে জন্যই এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।

এতদিন ভেসেলের সারেঙদের অনুমানের উপর নির্ভর করেই মেলায় হাজার হাজার যাত্রী বহনের কাজ চলেছে। নেটওয়ার্ক খারাপ থাকার জন্য পরিবহণ দফতরের বড় ভেসেলগুলিতে জিপিএস বসানো যায়নি। ফলে কাকদ্বীপ থেকে সাগরে যাওয়ার প্রধান পথ লট ৮ কচুবেড়িয়া ফেরি পারাপারে অসুবিধার মধ্যেও পড়েছে সবাই।

Advertisement

জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ‘‘এ বারই প্রথম মেলার যাত্রীদের নিরাপত্তা বাড়িয়ে ৩০টি ভেসেলে বসানো হচ্ছে উন্নত প্রযুক্তির জিপিএস ট্র্যাকিং ব্যবস্থা। এর জন্য বিভিন্ন ঘাটে ৪০টি এলইডি স্ক্রিনও থাকছে। তাতে তিনটি ভাষায় জোয়ার-ভাটা, ভেসেল ছাড়ার সময় দেখানো হবে।’’ জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানাচ্ছেন, প্রতিটি ভেসেলে এবং তিনটি বড় বার্জের সঙ্গে একজন করে অফিসার ওই জিপিএসগুলির দায়িত্বে থাকবেন। তাঁরা জানিয়েছেন, খুবই উন্নত প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে এই অনলাইন নজরদারি ব্যবস্থা যা দুর্বল ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক মানে টুজি ক্ষমতাতেও কাজ করবে। ভেসেলের মাথায় লালবাতি জ্বলবে, নিভবে। যাতে জিপিএসের বাইরেও দু’টি ভেসেল কাছাকাছি চলে এসে দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়।

গঙ্গাসাগর মেলার সময় ভাটার সময়টুকুবাদ দিয়ে বাকি পুরো সময়টাই পরিষেবা চালানো হয়। কলকাতা থেকে বাড়তি ভেসেল আনা হয়। মেলার সময় তাঁদের কাছে মুড়িগঙ্গার সেই রুট কিছুটা অপিরিচিতও থাকে। ভেসেল চালকদের অসুবিধা হয়। ফলে কুয়াশা হোক বা গভীর রাত, কোন ভেসেল নদীর ঠিক কোনখানে রয়েছে, তার হিসেব থাকবে কন্ট্রোল রুমে। একটি ভেসেলের মধ্যে থেকেই চালকরা বুঝে যাবেন, কাছাকাছি অন্য কোনও ভেসেল তাঁদের দিকে বিপজ্জনক ভাবে এগিয়ে আসছে কিনা।

এ বার জেলা প্রশাসন যাত্রী নিরাপত্তায় আগের চেয়ে অনেক বেশি তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করছে। ইতিমধ্যেই তীর্থসাথী প্রকল্পে ৫০০ সিসিটিভি ক্যামেরায় বাবুঘাট থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত যাত্রীদের যাতায়াত নজরে রাখা হবে। তার কাজ চলছে। মেলা কচুবেড়িয়া, লট ৮ ঘাট এবং ওই দু’টি ঘাট সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ডগুলিতেও এলইডি স্ক্রিন থাকবে। তাতে যাত্রীদের জন্য ইংরেজি, হিন্দি এবং বাংলাতে জোয়ারভাটার সময় বারে বারে দেখানে হবে। যাতে যাত্রীরা ভেসেল পরিষেবার অবস্থা নিয়ে একেবারেই অন্ধকারে না থাকে। গত বছর কচুবেড়িয়ায় দুর্ঘটনার একটা মূল কারণই ছিল, ভেসেল কখন ছাড়বে তা জানতে না পেরে অজথা হুড়োহুড়ি শুরু করা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন