Paray Shikshalaya

Paray Sikshalaya: স্কুলে গিয়েও মাঠেঘাটে ক্লাস, ক্ষোভ অভিভাবকদের একাংশের

রোদ-জলে মাটিতে বসে ছোটদের ক্লাস এ ভাবে করানোয় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকদের একাংশ।

Advertisement

প্রসেনজিৎ সাহা

ক্যানিং  শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:১৭
Share:

তালাবন্ধ ক্লাসের সামনে বারান্দায় বসে ক্লাস করছে পড়ুয়ারা। ক্যানিংয়ের একটি স্কুলে। নিজস্ব চিত্র।

ছোট ছোট পড়ুয়ারা সকালে তৈরি হয়ে স্কুলে আসছে। বিদ্যালয়ে ঢুকলেও ক্লাসঘরে ঢোকার অনুমতি নেই। স্কুলের মাঠ কিংবা ফাঁকা চত্বরে বসে চলছে ক্লাস। রোদ-জলে মাটিতে বসে ছোটদের ক্লাস এ ভাবে করানোয় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকদের একাংশ। নতুন ব্যবস্থা নিয়ে বেশ কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন শিক্ষকেরাও।

Advertisement

ক্যানিংয়ের হেড়োভাঙা কাছারিপাড়া এফপি স্কুলের কথাই ধরা যাক। বুধবার সেখানে গিয়ে দেখা গেল, সমস্ত ক্লাসরুমে তালা ঝুলছে। পড়ুয়াদের ভাগ করে বসানো হয়েছে স্কুলের বারান্দায়, মাঠে। সেখানেই চলছে পড়াশোনা। প্রধান শিক্ষক অটলচন্দ্র ভূঁইয়া বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের ক্লাসে ঢোকানোর অনুমতি নেই। তাই বাইরেই পড়াশোনার ব্যবস্থা করেছি।’’

দিন কয়েক আগে চালু হয়েছে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস। তারা পড়াশোনা করছে ক্লাসঘরেই। সোমবার থেকে রাজ্য সরকারের নির্দেশে প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য পাড়ায় শিক্ষালয় কর্মসূচি চালু হয়েছে। এই প্রকল্প অনুযায়ী, পড়ুয়ারা স্কুলে যাবে না, বরং শিক্ষক-শিক্ষিকারাই পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে খোলা জায়গায় ক্লাস করাবেন। পাশাপাশি মিড-ডে মিলের ব্যবস্থাও করতে হবে স্কুল কর্তৃপক্ষকে।

Advertisement

সব শর্ত মানতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছে বহু স্কুল। পাড়ায় গিয়ে কোনওমতে লেখাপড়া চললেও মিড-ডে মিল খাওয়াতে নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অনেক স্কুলই স্কুল চত্বরের খোলা জায়গায় বসিয়ে পড়ুয়াদের ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নেন। একাধিক স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, খোলা জায়গায় উপযুক্ত পানীয় জল, শৌচালয় নেই। সেখানে মিড-ডে মিল রান্না করা বা অন্যত্র রান্না করে তা বয়ে নিয়ে যাওয়া, খোলা জায়গায় পড়ুয়াদের খাওয়ানোর সমস্যার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গোটা পদ্ধতিতে ক্ষুব্ধ অনেক অভিভাবক। ক্যানিং ১ ব্লক, গোসাবা, বাসন্তী-সহ জেলার সর্বত্র ছবিটা একই। ক্যানিংয়ের বাসিন্দা সুজিত সরকার, নমিতা দাসদের প্রশ্ন, এ আবার কেমন নিয়ম! স্কুলে যাচ্ছে, কিন্তু ক্লাসরুমের বদলে মাঠে, পুকুর পাড়ে, বারান্দায় ক্লাস করতে হচ্ছে ছোট ছোট বাচ্চাদের। নমিতা বলেন, ‘‘মাঠেঘাটে কখনও পড়ায় মন বসে না। তা ছাড়া, পড়া শুনতেও অসুবিধা হয়। ক্লাসরুম খুলে দিলেই তো হয়।’’

ক্যানিং ১ বিডিও শুভঙ্কর দাস বলেন, ‘‘ সরকারি নির্দেশ মেনেই ক্যানিংয়ের ২৩৭টি স্কুলে পাড়ায় শিক্ষালয় কর্মসূচি চলছে। বেশিরভাগ জায়গায় গ্রামে গ্রামে গিয়ে ক্লাস করছেন শিক্ষকেরা। যেখানে পড়ুয়াদের জন্য উপযুক্ত জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না, সেখানেই স্কুল চত্বরে ক্লাস চলছে। তবে ব্লক প্রশাসনের তরফে পড়ুয়াদের বসার জন্য প্লাস্টিক, ছাউনির জন্য ত্রিপলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’

এ বিষয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শক সুজিতকুমার হাইত বলেন, ‘‘নিচু ক্লাসের পড়ুয়াদের শ্রেণিঘরে বসিয়ে ক্লাস করানোর নির্দেশ নেই। আপাতত এ ভাবেই চলবে পড়াশোনা। সরকারি নির্দেশের বাইরে গিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন