বিক্ষোভ চলছে। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের সমালোচনা করাতেই খুন করা হয়েছে গোপালনগরের কমল বাগচীকে, এই অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার উত্তপ্ত ছিল গোপালনগর। দেহ আটকে খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে পথ অবরোধ করেন স্থানীয় মানুষজন। তাতে সামিল হন সিপিএম এবং বিজেপির প্রার্থীরাও।
বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছিল গোপালনগরের চৌবেড়িয়া দক্ষিণপাড়ায়। বাড়ি থেকে বেরোনোর পরে গ্রামের রাস্তায় পিটিয়ে মারা হয়েছিল কমলবাবুকে। তিনি সাইকেল চুরি করেছিলেন, এই অভিযোগ তোলে স্থানীয় কিছু মানুষ। যা মানতে রাজি নন বিক্ষোভকারীরা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল থেকে কমলবাবুর দেহ ময়না-তদন্তের পরে গ্রামে আনা হয়। ঘটনার পরে অভিযুক্ত তিন ভাই বিজন রায়, সমর রায় ও পূর্ণেন্দু রায়কে পুলিশ গ্রেফতার করতে না পারায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। মৃতদেহ নিয়ে চৌবেড়িয়া পশ্চিমপাড়ায় গোপালনগর-নিমতলা সড়ক অবরোধ করা হয় মিনিট চল্লিশের জন্য। তাতে সামিল হন বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী রমেন আঢ্য, বিজেপি প্রার্থী স্বপন মজুমদারেরাও। মৃতদেহে মালাও দেন তাঁরা। পরে গোপালনগর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তদের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ ওঠে।
অভিযুক্তেরা এলাকায় তৃণমূলের সমর্থক বলে পরিচিত বলে দাবি স্থানীয় মানুষজনের একাংশের। রমেনবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূল নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার জেরেই কমলকে পিটিয়ে মারা হয়েছে।’’ স্বপনবাবুর অভিযোগ, ‘‘কমল এলাকায় ভাল মানুষ হিসাবেই পরিচিত ছিলেন। রান্নার কাজ করতেন।’’ তাঁর দাবি, মঙ্গলবার রাতে কমল বলেছিলেন, ‘সব পার্টি দেখলাম। এ বার বিজেপিকে ভোট দেবো।’ সে কারণে তৃণমূলের তিন কর্মী কমলকে পিটিয়ে মেরেছে বলে অভিযোগ স্বপনবাবুর। অবরোধকারী ও কমলবাবুর পরিবারের আবার অভিযোগ, তৃণমূলের সকলকে ‘চোর’ বলায় আক্রোশবশত সাইকেল চুরির অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে কমলকে।
যদিও অভিযুক্তদের নিজেদের কর্মী-সমর্থক বলতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের জেলা যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘‘অভিযুক্তেরা কেউ তৃণমূলের কর্মী নন। তা ছাড়া, ওই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কেউ যুক্তও নন। মৃত্যুর ঘটনাটি দুঃখজনক। কিন্তু বিরোধীরা এটাকে নিয়ে রাজনীতি করছে।’’