মৎস্যজীবীদের জন্য স্বাস্থ্য শিবির করল নৌসেনা 

নদীতে মাছ, কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘে-কুমিরের আক্রমণে প্রাণ গিয়েছে অনেকের। কেউ আবার জখম হয়ে কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন। অনেকেরই যা আর্থিক অবস্থা, তাতে চিকিৎসার খরচ, ওষুধ কেনার খরচ সামলাতে পারেন না। 

Advertisement

সামসুল হুদা 

বাসন্তী শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৮ ০৫:৩১
Share:

স্বাস্থ্যশিবির: ভারতীয় নৌসেনা মৎস্যজীবীদের পাশে। নিজস্ব চিত্র

নদীতে মাছ, কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘে-কুমিরের আক্রমণে প্রাণ গিয়েছে অনেকের। কেউ আবার জখম হয়ে কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন। অনেকেরই যা আর্থিক অবস্থা, তাতে চিকিৎসার খরচ, ওষুধ কেনার খরচ সামলাতে পারেন না।

Advertisement

এই ধরনের পরিবারের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে তাঁদের ওষুধপত্র দিতে এগিয়ে এল ভারতীয় নৌসেনা। শুক্রবার বাসন্তীর ঝড়খালিতে স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি উপকূল এলাকায় মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তা নিয়েও সচেতনতা শিবির হয়েছে।

ঝড়খালির ত্রিদিবনগরের বাসিন্দা গীতা সর্দার, সন্ধ্যা মণ্ডলরা বলেন, ‘‘আমাদের স্বামীরা নদীতে মাছ, কাঁকড়া ধরতে গেলে বাঘে তুলে নিয়ে যায়। আমরা কোনও সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাইনি। কোনও রকমে দিন গুজরান করি। নিজেদের নানা শারীরিক সমস্যার চিকিৎসা করাতে পারি না। এ ধরনের শিবির হলে বহু গরীব মৎস্যজীবী পরিবার উপকৃত হবে।’’ এই ধরনের শিবিবরের উপকারিতা মানছেন ঝড়খালির লস্করপুর সামুদ্রিক মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সম্পাদক সুকুমার শিকদারও।

Advertisement

নৌসেনার এক কর্তা সত্যকিসান মাইতি বলেন, ‘‘৪ ডিসেম্বর ভারতীয় নৌসেনা দিবস। এই দিবস উদযাপন করতে আমরা নৌসেনা সপ্তাহ পালন করি প্রতি বছর। এই উপলক্ষেই স্বাস্থ্য শিবির সহ নানা ধরনের উদ্যোগ করা হয়েছে। এই সব মৎস্যজীবীরা আমাদের নানা ভাবে সাহায্য করেন। তাই তাঁদের জন্য এমন স্বাস্থ্য শিবির।’’

স্বাস্থ্য শিবিরের পাশাপাশি সচেতনতামূলক আলোচনাও হয়েছে। নৌসেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, উন্মুক্ত সুন্দরবনের জলপথে উপকূল রক্ষী বাহিনী, নৌসেনা-সহ বিভিন্ন দফতর নজরদারি চালায়। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে খবরাখবরের জন্য নির্ভর করতে মৎস্যজীবীদের উপরে। কারণ, নৌসেনার জাহাজ সুন্দরবনের সব নদী, খাঁড়িতে ঢুকতে পারে না নজরদারি চালানোর জন্য।

সচেতনতা শিবিরে সকলকে বলা হয়েছে, প্রতিটি নৌকো বা ট্রলারে ‘এআইএস’ (অটোম্যাটিক আইডেন্টিটিফিকেশন সিস্টেম) ব্যবহার করা আবশ্যিক। দলবদ্ধ ভাবে মাছ ধরার সময়ে প্রতি নৌকোয় বা ট্রলারে সতর্কীকরণ ট্রান্সমিটার থাকতে হবে। প্রতিটি মৎস্যজীবীর এর ব্যবহার জানা দরকার। সে ক্ষেত্রে, তাঁরা যদি জলপথে কোনও বিপদে পড়েন, তা হলে সঙ্গে সঙ্গে সেই খবর উপকূল রক্ষী বাহিনী বা নৌসেনাকে জানাতে পারবেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনও নৌকো বা ট্রলার ফিরে না এলে বা কোনও অপরিচিত নৌকো নোঙর করলে, জলপথে ঘোরাঘুরি করলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ, উপকূল রক্ষী বাহিনী, ভারতীয় তটরক্ষক অথবা নৌসেনাকে জানাতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন