প্রতীকী ছবি।
রাস্তার পাশে পড়ে থাকা প্লাস্টিকের গ্লাসে জল জমে বংশবিস্তার করেছে মশা। পলিথিন, আবর্জনায় নর্দমার মুখ বন্ধ হয়ে সেখানেও জন্মাচ্ছে মশা। এ ছবি পরিচিত বিভিন্ন এলাকায়। তবে এর বদল না এলে রোগ এড়ানো কার্যত অসম্ভব।
গত বছরেই মশাবাহিত রোগের কবলে পড়ে প্রায় মহামারির অবস্থা হয় উত্তর ২৪ পরগনায়। ডেঙ্গি ও অজানা জ্বরে আক্রান্ত হন কয়েক হাজার মানুষ। মারা যান অনেকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ল্যাজে-গোবরে হয় প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতর। সেই পরিস্থিতি যাতে ফের না হয়, তা নিশ্চিত করতে আগেভাগেই কোমর বেঁধে নেমেছে প্রশাসন। এর অন্যতম ধাপ হিসেবে পলিথিন ও প্লাস্টিকদ্রব্য বর্জন করানোর অভিযান শুরু হয়েছে। বর্ষার আগেই জেলা প্রশাসন আর স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে জোর কদমে প্রচারে নেমেছে বিভিন্ন পুরসভা। দমদম থেকে বারাসতের বিভিন্ন বাজারে হানা দিয়ে প্লাস্টিক বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি কাগজ ও কাপড়ের ব্যাগ বিলিও চলছে। পলিথিন ব্যবহার হলে দোকানি ও ক্রেতাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, ‘‘ডেঙ্গি, অজানা জ্বর রোধে আগাম ব্যবস্থা নেওয়ায় সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। মশা রুখতে আগে থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। মানুষকেও সচেতন হতে হবে।’’
সম্প্রতি দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পিয়ালি দত্ত কদমতলা বাজারে কাপড়ের ব্যাগ বিলি করছেন। ব্যাগে লেখা, ‘প্লাস্টিক বর্জন করুন।’ প্রচারে কাজ হচ্ছে না বলে বাজারে হানা দিয়ে পলিথিন ব্যাগ পাকড়াও করছেন বারাসত পুরসভার দুই কাউন্সিলর তন্নিষ্ঠা খাসনবীশ ও সমীর কুণ্ডু। ওই পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বারবার নিষেধাজ্ঞার পরেও ব্যবসায়ীদের সময় দেওয়া হয়। এর পরে আর সময় নয়। ধরা পড়লেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ কাপড়ের ব্যাগ বিলি করেছেন ১২ নম্বর ওয়ার্ডের জয়ন্তী সেনশর্মাও।
বস্তুত, এই জেলার বিভিন্ন পুর এলাকায় আগেও নিষিদ্ধ হয় প্লাস্টিক। কিন্তু নজরদারির অভাবে ফের চালু হয়ে যায় যথেচ্ছ ব্যবহার। কড়া নজরদারি, শাস্তির বিধান থাকলে যে এই প্রবণতা অনেকটাই কমে, তা করে দেখিয়েছে মধ্যমগ্রাম পুরসভা। সেখানে পলিথিন, প্লাস্টিকের ব্যবহার প্রায় নেই বললেই চলে।
এখন থেকে শুরু করা অভিযান আর নজরদারির পরে সর্বত্র এমন অবস্থা হয় কি না, সেটাই দেখার।