মন্দিরবাজারে ডুবেছে কৃষিজমি। ছবি: দিলীপ নস্কর
প্রত্যেক বছরের মতো এ বছরও যমুনা নদীর জল ঢুকে জলমগ্ন হল গোপালনগর থানার চৌবেড়িয়া ১ পঞ্চায়েতের কিছু এলাকা। পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, চৌবেড়িয়া পশ্চিমপাড়া, চক চৌবেড়িয়া, ফুলবাড়ি ও হিংলি এলাকায় নদীর জল কৃষি খেত ও লোকালয়ে ঢুকছে। ফের একবার বানভাসি হওয়ার আশঙ্কায় মানুষ।
সোমবার পশ্চিমপাড়ায় নদীর জল বাড়ির উঠোনে চলে এসেছে। স্থানীয় বাসিন্দা মাধব গোলদার, ভবানী সরকাররা বলেন, ‘‘সোমবার রাতেও যদি এমন বৃষ্টি হয় তাহলে ঘর ছাড়তে হবে।’’ মিলন অধিকারী বলেন, ‘‘নদী সংস্কার করা না হলে আমাদের দুর্ভোগ কমবে না।’’ এলাকার মানুষের দাবি, নদী কাটাতে হবে। চক চৌবেড়িয়ায় নদীর জল ঢুকে কৃষি খেতগুলি জলের তলায় চলে গিয়েছে।
এলাকার প্রবীণেরা জানান, বছর তিরিশ আগেও নদীতে স্রোত ছিল। বৃষ্টির জমা জল নদীতে গিয়ে পড়ত। জল জমলেও কয়েক দিনের মধ্যে তা বেরিয়ে যেত। মৎস্যজীবীরা নদীতে মাছ ধরতেন। নদী পথে মানুষ যাতায়াতও করতেন। কিন্তু এখন সে সব অতীত। নদী এখন কচুরিপানা ও শ্যাওলায় ভরে রয়েছে। বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য অলোক নন্দী বলেন, ‘‘সেচ দফতরে জানানো হলেও কাজ হয়নি।’’ সেচ দফতর সূত্রে খবর, ওই নদী সংস্কারের জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
দত্তপুকুর, শাসন, আমডাঙা ও দেগঙ্গা থানারও বেশ কিছু এলাকায় জল জমে রয়েছে। এর মধ্যে কদম্বগাছির পূর্ব ইছাপুর, ধর্মতলায় হাঁটু সমান জল জমে রয়েছে। এ দিন দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা-পৃথিবা রোডে একটি গাছ উল্টে যায়। প্রায় ৬ ঘণ্টা যাতায়াত বন্ধ থাকে ওই রাস্তায়। জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, এই বৃষ্টিতে বীজতলা জলে ডুবে ধানের ক্ষতি হয়েছে। আবার পাট বাঁচাতে পাট কাটা শুরু করেছেন চাষিরা।
পাশাপাশি দত্তপুকুর, শাসন, আমডাঙা, দেগঙ্গা থানারও বেশ কিছু এলাকাও জলমগ্ন। এ দিন দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা-পৃথিবা রোডে একটি বিশাল গাছ উল্টে যায়। প্রায় ৬ ঘণ্টা যাতায়াত বন্ধ থাকে ওই রাস্তায়। পরে গাছ কেটে রাস্তা পরিষ্কার করা হয়। জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, এই বৃষ্টিতে বীজতলা জলে ডুবে ধানের ক্ষতি হয়েছে। আবার জল জমে যাওয়ায় পাট বাঁচাতে এই বৃষ্টির মধ্যেই পাট কাটা শুরু করেছেন চাষিরা।
জলমগ্ন অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার দু’টি এলাকাও। পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সুকান্তপল্লি ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রান্তিক পল্লিতে হাঁটু সমান জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। কিছু বাড়িতেও জল ঢুকেছে। নিকাশি ব্যবস্থার জন্য প্রতি বছর জল জমছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। পুরপ্রধান প্রবোধ সরকার বলেন, ‘‘দ্রুত ওই এলাকা থেকে জমা জল বের করে দিতে পুরসভার পক্ষ থেকে পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’
জেলাশাসক অন্তরা আচার্য জানান, জেলার পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে ২৪ ঘণ্টা ‘কন্ট্রোল রুম’ খোলা হয়েছে। তবে এই জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।