প্রতীকী ছবি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পরিপ্রক্ষিতে জয়পুরের ভাটোরা তদন্তকেন্দ্রকে শক্তিশালী করার কাজ শুরু করে দিল হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা পুলিশ। শনিবারেই সেখানে তিন জন পুলিশ অফিসার এবং ১৫ জন কনস্টেবল পাঠানো হয়। এতদিন পর্যন্ত এখানে দু’জন পুলিশ অফিসার এবং ১১ জন কনস্টেবল ছিলেন। সব মিলিয়ে অফিসার এবং কনস্টেবলের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩১-এ।
এ দিন পুলিশ সুপার গৌরব শর্মা নিজে ওই তদন্তকেন্দ্রে গিয়ে বাড়তি পুলিশকর্মী বহাল করার বিষয়টি তদারক করেন। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, জয়পুর থানার অধীনে চলে ভাটোরা তদন্তকেন্দ্রটি। কিন্তু অতিরিক্ত অফিসার এবং কনস্টেবলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় তা থানাকে ছাড়িয়ে গেল।
গত বৃহস্পতিবার শরৎসদনে জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক তথা জেলা (গ্রামীণ) তৃণমূল সভাপতি পুলক রায় ভাটোরা তদন্তকেন্দ্রের পরিকাঠামোগত উন্নতির জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন। মুখ্যমন্ত্রী জেলার পুলিশ কর্তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
ভাটোরা এবং ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান— এই দুই পঞ্চায়েত এলাকার আইনশৃঙ্খলা দেখভাল করে ওই তদন্তকেন্দ্রটি। দুই পঞ্চায়েত জেলার ‘দ্বীপাঞ্চল’ বলে পরিচিত। রূপনারায়ণ এবং মুণ্ডেশ্বরী নদী ঘেরা দুই পঞ্চায়েতের সঙ্গে স্থলপথে কোনও যোগাযোগ নেই। স্থানীয় বাসিন্দা এবং জেলা পুলিশের একটা বড় অংশের মতে, যোগাযোগের অভাবের সুযোগ নেয় দুষ্কৃতীরা। অপরাধ করে পুলিশ আসার আগেই নদীপথে হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় চম্পট দেয়।
২০১০ সালে দুই পঞ্চায়েত এলাকায় দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্য বেড়ে গিয়েছিল। ভয়ে বাড়ি ছেড়েছিলেন অনেক গ্রামবাসী। তোলাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে শিক্ষকেরা স্কুলে আসা বন্ধ করে দেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে কয়েকজনকে ধরে। সে বছরই চালু হয় তদন্তকেন্দ্রটি। কিন্তু পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন ছিল। গত বছর এখানে খুন হন তৃণমূল নেতা শেখ শাজাহান এবং তাঁর ভাই শেখ লালচাঁদ। স্থানীয় দুষ্কৃতীরাই দু’জনকে খুনের আগের রাতে গ্রামে জড়ো হলেও ভাটোরা তদন্তকেন্দ্র ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। পুলিশ সেই সময় পরিকাঠামোগত সমস্যার কথা মেনে নিয়েছিল।
এ বার পুলিশকর্মীর সংখ্যা বাড়ায় কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছেন গ্রামবাসী। আমতার কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘আমরা এই দাবি আগেই করেছিলাম। আশা করি, তদন্তকেন্দ্র এ বার কার্যকরী ভূমিকা নেবে।’’