প্রতীকী ছবি।
স্ত্রীকে খুন ও তথ্য প্রমাণ লোপাটের দায়ে বছর পঁয়তাল্লিশের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল কাকদ্বীপ এডিজে আদালত।
কাকদ্বীপ এডিজে পার্থপ্রতিম চক্রবর্তীর এজলাসে বৃহস্পতিবার এই মামলার রায়দান ছিল। সরকারি আইনজীবী গুরুপদ দাস বলেন, ‘‘এরকম ভাবে খুনের জন্য ফাঁসির দাবি জানিয়েছিলাম। আদালত সব পক্ষের কথা শুনে অভিযুক্ত বাবলু গায়েনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছেন।’’ তিনি জানান, তথ্য প্রমাণ লোপাটের জন্য আরও ৭ বছরের জেল। বাবলুর ভাই শ্যামল প্রায় তিন বছর জেল খেটে নিয়েছে বলে তাকে আর সাজা দেওয়া হয়নি।
আদালত এবং পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২ বছর সংসার করার পর স্ত্রী পাঞ্চালির বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ করত বাবলু। বছর তিনেক আগে নিজেদের বেগুন খেতে কাজ করার সময় তা নিয়ে তাঁর সঙ্গে স্ত্রীর তুমুল ঝামেলা হয়।
সেই সময় বাবা মায়ের ঝগড়া দেখে শিক্ষকের বাড়িতে পড়তে চলে যায় ছেলে শুভঙ্কর এবং মেয়ে সুপর্ণা। ঝামেলার জেরে স্ত্রীর মাথায় সজোরে কোদালের কোপ মারে বাবলু। সেখানেই স্ত্রী লুটিয়ে পড়ে। বাবলু তার ভাই শ্যামলকে ডেকে পাঞ্চালির দেহ সেখানেই গর্ত খুঁড়ে পুঁতে দেয়। পরে তার উপর একটি কলাগাছও লাগিয়ে দিয়েছিল তারা। পরে ছেলেমেয়েরা ফিরলে তাদের বলা হয়, ঝামেলা করে কোথাও চলে গিয়েছে তাদের মা।
পুলিশ জানিয়েছে, পাঞ্চালির বাবা মা নেই। তাঁর বৌদি সুপর্ণা কয়াল দীর্ঘদিন ধরে পাঞ্চালির খোঁজ করেও পাননি। কিন্তু ভুল করে বসে বাবলুর ভাই শ্যামল। মেহেরপুরের স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে মহারাষ্ট্রে শ্রমিকের কাজ করতে গিয়ে প্রচুর মদ খেয়ে এই ঘটনার কথা বলে ফেলে। তখন তাঁদেরই একজন পাঞ্চালির বৌদিকে তা জানান।
২০১৪ ডিসেম্বরে বাবলুর বিরুদ্ধে ঢোলাহাট থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। ঘটনার তদন্তকারী অফিসার নারায়ণচন্দ্র বসাক বেগুন খেত থেকে পাঞ্চালির হাড়গোড় উদ্ধার করে তদন্ত শুরু করেন। গ্রেফতার হয় বাবলু এবং শ্যামল।
অভিযুক্তের আইনজীবী ছিলেন লিগাল এইড ফোরামের পক্ষে দুলাল দলুই। তিনি বলেন, ‘‘মক্কেল উচ্চ আদালতে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে আমরা তার হয়ে যাব।’’