কেন্দ্রীয় শুল্ক আধিকারিক প্রদীপ কুমারের অভিযোগ, ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ঢোকেন ৪০-৫০ জন। —নিজস্ব চিত্র।
অটোস্ট্যান্ডের সামান্য বচসা গিয়ে ঠেকল রক্তারক্তি কাণ্ডে! দলবল নিয়ে কেন্দ্রীয় শুল্ক দফতরের এক আধিকারিকের ফ্ল্যাটে ঢুকে তাঁকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ অটোচালকের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থল দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের মেগাসিটি এলাকা। রবিবার জখম ওই শুল্ক আধিকারিকের শারীরিক পরিস্থিতির খোঁজ নেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁকে এমসে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। অন্য দিকে, পুলিশ মোট চার জনকে গ্রেফতার করেছিল। তাঁদের সকলের জামিন মঞ্জুর করেছে বারুইপুর আদালত।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার রাতে। অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে সোনারপুর মেগাসিটি এলাকার বাসিন্দা, পেশায় কেন্দ্রীয় শুল্ক আধিকারিক প্রদীপ কুমারের সঙ্গে স্থানীয় এক অটোচালকের বচসা হয়। বচসা শেষ পর্যন্ত হাতাহাতিতে গড়ায়। পরে কয়েক জনের মধ্যস্থতায় উভয়েই ওই জায়গা থেকে বেরিয়ে যান। কিন্তু এখানেই শেষ হয়নি। যে আবাসনে প্রদীপ থাকেন, ‘প্রতিশোধ’ নিতে ৪০-৫০ জনকে নিয়ে সেখানে পৌঁছে যান ওই অটোচালক। শুল্ক আধিকারিকের ঘরে ঢুকে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। আক্রমণ করা হয় প্রদীপের স্ত্রীকেও। নাবালক সন্তানকেও মারধর করেন তাঁরা।
তদন্ত নেমে আজিজুল গাজি নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ধৃতের বাড়ি পোলঘাট এলাকায়। পুলিশের সূত্রে খবর, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হামলায় জড়িত আরও কয়েক জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে শনিবারই মূল অভিযুক্ত জামিন পেয়ে যান। রবিবার আরও তিন জনকে আদালতে হাজির করানো হয়েছিল আদালতে। তাঁদেরও জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক।
রবিবার প্রহৃত কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। তিনি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা নিয়ে খোঁচা দেন। শুভেন্দুর কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ কারও জন্য আজ সুরক্ষিত নয়। ওঁকে খুনের চেষ্টা করা হয়েছে। আর পুলিশ লঘু ধারায় মামলা করেছে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে।’’ শুভেন্দু প্রদীপকে কল্যাণী এমসে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রদীপ জানান, সে দিন বাড়ি ফেরার সময় একটি অটোর সঙ্গে তাঁর বাইকের ধাক্কা লাগে। সেখান থেকে বচসা এবং তার পরে আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। তাঁর ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েন বেশ কয়েক জন। মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁর। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হলে প্রথমে তারা গা করেনি। যদিও পুলিশের তরফে ওই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। ঘটনায় জড়িত সকলকে ধরার চেষ্টা চলছে। অন্য দিকে, ওই ঘটনার পরে প্রদীপদের আবাসনের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।