প্রশিক্ষণ: কাকদ্বীপে। ছবি: দিলীপ নস্কর
মৎস্যজীবীদের সতর্কতার অভাবেই মাঝসমুদ্রে বার বার ট্রলার দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞেরা। শুক্রবার বিকেলে কাকদ্বীপের মৎস্য বন্দরে ভারতীয় উপকূল রক্ষী বাহিনীর পশ্চিমবঙ্গ শাখার উদ্যোগে ফ্রেজারগঞ্জে মৎস্যজীবীদের নিয়ে এক কর্মশালাতেও উঠে এল এই কথা গভীর সমুদ্রে তলিয়ে কেউ গেলে কী উদ্ধারের পরে কী ভাবে শুশ্রূষা করা দরকার, তা-ও এ দিন দেখানো হয়েছে মৎস্যজীবীদের।
ইলিশের মরসুমে ট্রলার দুর্ঘটনায় কাকদ্বীপের প্রায় ৪০ জন মৎস্যজীবী প্রাণ হারিয়েছেন এ বার। সে সবের কারণ আলোচনা করতে গিয়ে বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, গভীর সমুদ্রে যাওয়ার আগে সতর্ক বার্তা পাঠানো যন্ত্র (ড্যাট) ও রেডার ট্রেলারে থাকা দরকার। মৎস্যজীবীর জন্য আলাদা আলাদা লাইফ জ্যাকেট থাকা উচিত। প্রতি তিন জন মৎস্যজীবী পিছু একটি করে বয়া রাখা দরকার। ট্রলারে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা থাকা জরুরি। ট্রলার নির্দিষ্ট রঙেরও হওয়ার কথা। মৎস্যজীবীদের সঙ্গে পরিচয়পত্র রাখাও বাধ্যতামূলক।
কিন্তু এমন বহু জরুরি জিনিস মেনে চলা হয় না বলে অভিযোগ তুলেছেন উপকূল রক্ষী বাহিনীর আধিকারিকেরা। ফ্রেজারগঞ্জ কোস্টাল উপকূল রক্ষী বাহিনীর কম্যান্ডিং অফিসার অভিজিৎ দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘মৎস্যজীবীদের সুরক্ষার জন্য আমরা সর্বদাই তৎপর। কিন্তু তাঁদের নিজেদের গাফিলতির জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ঘটছে।’’
এ দিনের কর্মশালায় ছিলেন আবহাওয়া দফতরের আধিকারিক গণেশ দাস। তিনি প্রতিটি ট্রলারে রেডিয়োর মাধ্যমে নিয়মিত আবহাওয়ায় খবর রাখার গুরুত্বের কথা বলেন। এ দিন কর্মশালায় ট্রলারে রাখা নানা যন্ত্রের ব্যবহার হাতে-কলমে বোঝানো হয় মৎস্যজবীদের। একশো জনকে লাইফ জ্যাকেটও দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ছিলেন সহ মৎস্য অধিকর্তা (ডায়মন্ড হারবার) চন্দন প্রধান, কাকদ্বীপ ফিশারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতি, সতীনাথ পাত্ররা। ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিয়ো ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস জানান, মৎস্যজীবীদের বার্তা পাওয়ার জন্য তাঁরা সব রকম সাহায্য করতে প্রস্তুতি।