পাশে-আছি: কালীনগরে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলছেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: নির্মল বসু
প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম না নিয়েই চলছে আয়লা প্রকল্পের বাঁধ মেরামতের কাজ। বুধবার সন্দেশখালিতে ওই প্রকল্পের কাজ দেখতে এসে সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এ জন্য দফতরের অফিসার ও ঠিকাদারকে ধমক দেন। পাশাপাশি কাজ বন্ধ রাখারও নির্দেশ দেন তিনি।
এ দিন সকালে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় নদী বাঁধের কাজ কতটা এগিয়েছে এবং কতটা স্বচ্ছতা মেনে কাজ চলছে তা সরেজমিনে ঘুরে দেখেন মন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাত, সেচ দফতরের চিপ ইঞ্জিনিয়ার গৌতম চট্টোপাধ্যায়, সুপারিনটেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার জয়ন্ত দাস, মহকুমা নির্বাহী বাস্তুকার নিরঞ্জন সিংহ ও বিডিও। ন্যাজাট থেকে তাঁরা লঞ্চে ওঠেন। তিনি এ দিন সন্দেশখালি ১ ও ২ ব্লক-সহ হিঙ্গলগঞ্জের রমাপুরে যান।
হাটগাছি গ্রামে বিদ্যাধরী নদীতে সাড়ে ৭০০ মিটার কাজ দেখার পর কালীনগরে বেতনী নদীর বাঁধ ঘুরে দেখেন তিনি। এরপরেই রাজীববাবু যান সন্দেশখালি ২ ব্লকের বেড়মজুর ২ পঞ্চায়েতের ঝুপখালি গ্রামে আয়ালা বাঁধের কাজ দেখতে। সেখানে ৬১৯ মিটার বাঁধের কাজের জন্য সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। ওই বাঁধে জেসিবি দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছিল। সেই মাটি ঠিক মত ড্রেসিং না করে বাঁধের কাজ করা হচ্ছে দেখে মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার এবং ঠিকাদারকে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম না নিয়ে কেন বাঁধের কাজ করা হচ্ছে তা জানতে চেয়েই সংশ্লিষ্ট দফতরের লোকজনকে ধমক দেন তিনি।
সেচ দফতর সূত্রের খবর, বাঁধ মেরামতের জন্য ১২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যার মধ্যে বেশির ভাগ সুন্দরবন এলাকার বাঁধের জন্য খরচ করা হবে বলে তিনি জানান। বর্ষা আসার আগেই এই কাজ শেষ করতে হবে। রাজীববাবু বলেন, ‘‘এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। এখানকার মানুষ যাতে কোনও রকম বিপর্যের মধ্যে না পড়ে, সে দিকেই মুখ্যমন্ত্রী নজর দিতে বলেছেন।’’ বসিরহাটের সুন্দরবন এলাকায় প্রায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার নদীবাঁধের জন্য ৩ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও ২৫ কিলোমিটার পাকা বাঁধ করা হবে বলে তাঁর দাবি। তা ছাড়া বাঁধের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পরেই ঠিকাদারেরা টাকা পাবেন বলে তিনি জানান।
রাজীববাবু জানান, কোথাও কেউ যদি খাল কিংবা নদী দখলের চেষ্টা করে তা হলে তার বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপ করা হবে।
তবে কালীনগরে প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে দু’কিলোমিটার কংক্রিটের বাঁধ মেরামতের কাজ চলছে। তা এখন শেষের পথে। বাঁধের কাজ দ্রুত হওয়ায় এলাকার মানুষও খুশি। সে কথা জানিয়ে মন্ত্রীকে ফুল দিয়ে বরণ করেন গ্রামের মানুষ। ঠিকাদারদের প্রশংসাও করেন মন্ত্রী।