Kali Puja 2023

‘জ্যোতিহীন’ কালীপুজোয় হাবড়ায় মনমরা অনুগামীরা

স্থানীয় দেশবন্ধু সেবা সমিতির পুজোর উদ্বোধন করতেন বালু। এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত হাবড়ার প্রাক্তন পুরপ্রধান তৃণমূলের নীলিমেশ দাস।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র  

  হাবড়া শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:০৬
Share:

জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।

বারাসত-মধ্যমগ্রামের পরে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় কালীপুজোর আয়োজনে বরাবরই এগিয়ে থাকে হাবড়া শহর। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ থিম পুজোর আকর্ষণে এখানে আসেন। রাত জেগে মণ্ডপে মণ্ডপে ঘোরেন। ২০১১ সাল থেকে হাবড়ার কালী পুজোয় বরাবর থাকতেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। আগের দিন থেকেই মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে উদ্বোধন করতেন। মণ্ডপে সময় কাটাতেন। গল্পগুজব করতেন, আড্ডা দিতেন। শহরে সব থেকে বেশি পুজোর উদ্বোধন জ্যোতিপ্রিয়ের হাতেই। সেই হাবড়া এ বার দেখতে চলেছে ‘জ্যোতিহীন’ কালীপুজো।

Advertisement

দিন কয়েক আগে রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন হাবড়ার বিধায়ক তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়। হাবড়ার পুরপ্রধান নারায়ণ সাহা বলেন, "২০১১ সালে হাবড়ার বিধায়ক হওয়ার পর থেকে কালীপুজোয় হাবড়ায় বালুদার (জ্যোতিপ্রিয়ের ডাক নাম) উপস্থিতি নিয়মে পরিণত হয়েছিল। বালুদাকে ছাড়া শহরে কালীপুজোর আয়োজন ভাবাই যেত না। সে দিক থেকে দেখতে গেলে এ বারের পুজো ব্যতিক্রম। আমাদের মতো তৃণমূল কর্মীদের দীপাবলির উৎসবে মন ভাল নেই।" এক তৃণমূল নেতার কথায়, "ইডি হেফাজতে থাকলেও কালীপুজোয় নিশ্চয়ই বালুদার মন পড়ে থাকবে হাবড়ায়।"

স্থানীয় দেশবন্ধু সেবা সমিতির পুজোর উদ্বোধন করতেন বালু। এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত হাবড়ার প্রাক্তন পুরপ্রধান তৃণমূলের নীলিমেশ দাস। তিনি বলেন, "এ বারও আমরা বালুদাকে দিয়েই পুজো উদ্বোধন করার কথা ভেবে রেখেছিলাম। উনি না থাকায় আমরা হতাশ।" মছলন্দপুর বয়েজ ক্লাব বরাবরই বড় পুজো করে। এ বার মণ্ডপ হয়েছে দক্ষিণ ভারতের মন্দিরের আদলে। পুজোর সঙ্গে যুক্ত জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ অজিত সাহা বলেন, "১০-১২ বছর ধরে আমাদের পুজো উদ্বোধন করতেন বালুদা। এ বারও করার কথা ছিল। আমাদের ছেলেদের খুবই মন খারাপ। ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে বালুদার আন্তরিক সম্পর্ক ছিল।" এ বার এই পুজো উদ্বোধন করার কথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী এবং তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসের।

Advertisement

শ্রীপুর ভারতীয় সঙ্ঘের পুজোরও নামডাক আছে। এই পুজোও কয়েক বছর ধরে উদ্বোধন করেছেন জ্যোতিপ্রিয়। এ বার ও করার কথা ছিল। পুজোর সঙ্গে যুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলর শঙ্কর ঘোষ বলেন, "আমরা হতাশ। মা কালীর কাছে প্রার্থনা করছি, সামনের বছর যেন বালুদা ফের আমাদের পুজো উদ্বোধন করতে পারেন।"

বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি স্বভাবতই এ নিয়ে কটাক্ষ করছে।

হাবড়ার বাসিন্দা তথা বিজেপি নেতা বিপ্লব হালদার বলেন, "হাবড়ায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে যাঁরা মদত দিতেন, আর জ্যোতিপ্রিয় যাঁদের মদত দিতেন— তাঁরাই মন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে দুঃখিত। তবে হাবড়ার সাধারণ মানুষ আনন্দিত।"

হাবড়ার সিপিএম নেতা আশুতোষ রায়চৌধুরীর কথায়, "জ্যোতিপ্রিয় হাবড়ার বিধায়ক হওয়ার আগেও এখানে জাঁকজমক করে কালী পুজো হত। তিনি থাকতেও হয়েছে। ভবিষ্যতেও হবে। উনি নিজের রাজনৈতিক স্বার্থেই মণ্ডপে মণ্ডপে যেতেন। মানুষ খুব একটা আন্তরিক ভাবে ডাকত না।"

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন