সংগ্রহ: আঁকা ছবি বিক্রি করে তোলা হচ্ছে টাকা। ছবি: সুজিত দুয়ারি
কেউ আঁকছে জলে ডুবে থাকা বাড়িঘর। কারও ছবিতে জলে ভেজা গ্রামের দৃশ্য। কারও রঙতুলিতে ফুটেছে আকাশের দিকে হাত তুলে মানুষের ছবি। হেলিকপ্টার থেকে ত্রাণের অপেক্ষায় তাঁরা।
বুধবার সকাল থেকে বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখায় হাবড়ার মছলন্দপুর স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে জড়ো হয়ে শিল্পীরা ছবি এঁকে বিক্রি করলেন। কেরলের মানুষের পাশে দাঁড়াতেই তাঁদের এই প্রয়াস।
স্থানীয় মছলন্দপুর ইমন মাইম সেন্টার ও মনীষা সাংস্কৃতিক সংস্থার তরফে আয়োজন করা হয়েছিল এমন কর্মসূচির। সৃজা হাওলাদার, তৃষ্ণা পাড়ুই, অদ্বিতীয়া রায়ের মতো কচিকাঁচারাও মোম রঙ দিয়ে কাগজের উপরে ফুটিয়ে তুলছে বন্যার নানা দৃশ্য। ছবি আঁকা শেষ হলে তারাই আবার স্টেশনে আসা মানুষদের কাছে তা বিক্রি করছে। কেউ ১০ টাকা কেউ ৫০ টাকা দিয়ে সেই ছবি কিনছেন। নিজেদের ছবি বিক্রি করতে পেরে ছোট ছেলেমেয়েরা খুশি। নিত্যযাত্রীরাও এমন উদ্যোগকে বাহবা দিচ্ছেন।
কচিকাঁচাদের পাশাপাশি স্থানীয় নামী শিল্পীরাও এ দিন ছবি এঁকেছেন। আর্ট কলেজের এক শিক্ষক তৈবুল ইসলাম ইদের নমাজ পড়েই চলে এসেছিলেন স্টেশনে। কিশোর মল্লিক, পঙ্কজ মণ্ডলের মতো নামী শিল্পীরাও এসেছিলেন ছবি আঁকতে। সকলেই জানালেন, কেরলের দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এমন উদ্যোগে সামিল হতে পেরে সকলেই খুশি।
ছবি বিক্রির পাশাপাশি, আয়োজকদের তরফে সাধারণ মানুষের কাছ থেকেও টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। উদ্যোক্তাদের দাবি, প্রতিষ্ঠিত ও কচিকাঁচা মিলিয়ে এ দিন ৫০ জন শিল্পী ছবি এঁকেছেন। ছবি বিক্রিও করেছেন তাঁরা। সংগৃহীত অর্থ একটি সংস্থার কাছে পাঠানো হবে। যারা দুর্গতদের জন্য কাজ করছে।
আয়োজকদের তরফে ধীরাজ হাওলাদার বলেন, ‘‘প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময়ে মানুষের পাশে থাকা উচিত। তার জন্যই আমাদের এই পদক্ষেপ।’’
বনগাঁর একদল তরুণ-তরুণী কেরলের মানুষের কাছে আর্থিক সাহায্য পৌঁছে দিতে রবিবার থেকে অর্থ সংগ্রহ করছেন। এঁদের কেউ ছাত্র কেউ শিক্ষক। রুদ্রপ্রসাদ ঘোষ, রণদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌমদীপ রায়, অমর্ত্য বিশ্বাস, সন্দীপ ঘোষেরা দিন-রাত এক করে বাজার-হাট-রাস্তা-স্টেশনে গিয়ে টাকা তুলেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, কেরলে গিয়ে সরাসরি দুর্গতদের কাছে পৌঁছে দেবেন টাকা।