Food distribution

দুর্গতদের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে ছোটরাও

বসিরহাট মহকুমার সন্দেশখালি ১ ব্লকের ন্যাজাটে ২০০৫ সালে গড়ে ওঠে একটি নাট্য উৎসব কমিটি। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় সংস্কৃতির প্রচারই তাদের লক্ষ্য।

Advertisement

নির্মল বসু 

বসিরহাট শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২১ ০৭:৩৪
Share:

ছাত্রদল: দুর্গতদের রান্না করা খাবার বিলি করছে ছোটরা। নিজস্ব চিত্র।

ওদের কেউ চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে, কেউ অষ্টম বা দশম শ্রেণির পড়ুয়া। প্রত্যেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত। ইয়াসে বিপর্যস্ত উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় এখন ত্রাণসামগ্রী বা রান্না করা খাবার বিলিতে ব্যস্ত তিস্তা, দিয়া, সোহিনী, সৌমিক ও বিতানের মতো কিশোর-কিশোরীরা।

Advertisement

করোনা-বিধি মেনে চাঁদা তুলেছে তারা। তাদের দেখে এগিয়ে এসেছেন বড়রাও। ত্রাণবিলিতে আসা কলকাতা বা বারাসতের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা ওই শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের সাহায্যে আহার তুলে দিচ্ছেন ক্ষুধার্তদের মুখে।

বসিরহাট মহকুমার সন্দেশখালি ১ ব্লকের ন্যাজাটে ২০০৫ সালে গড়ে ওঠে একটি নাট্য উৎসব কমিটি। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় সংস্কৃতির প্রচারই তাদের লক্ষ্য। প্রত্যেক বছর নাট্য উৎসব করে ওই সংগঠন। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, মনোজ মিত্র, মেঘনাথ ভট্টাচার্য, কৌশিক সেন, সোহিনী সেনগুপ্ত, স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত ও দেবশঙ্কর হালদারের মতো নাট্য ব্যক্তিত্ব এসেছিলেন তাঁদের ডাকে। ওই সংস্থার উদ্যোগে অল্পবয়সী ছেলে-মেয়েদের নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে নাট্যশিক্ষার কর্মশালা। নাট্যচর্চার পাশাপাশি বিপদের সময় কী ভাবে দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াতে উৎসাহিত করা হয় শিশু-কিশোর-কিশোরীদের।

Advertisement

দশম শ্রেণির পড়ুয়া চন্দন ঘাঁটি, অষ্টম শ্রেণির সৌমিক সাউ ও চতুর্থ শ্রেণির বিতান দাসের মতো অনেকেই যুক্ত হয়েছেন এই উদ্যোগে। হাটবাজারে ঘুরে পরিচিতদের থেকে চাঁদা তুলে শুকনো খাবার, মশারি, টর্চ এবং জামাকাপড় কিনে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে তারা। ন্যাজাট এবং নিত্যবেড়িয়া গ্রামে কমিউনিটি কিচেন খোলা হয়েছে। এ দিন সেখানে গিয়ে দেখা যায়, হাতা-খুন্তি নিয়ে ছোটাছুটি করছে কিশোর-কিশোরীরা। খিচুড়ি আর তরকারি তুলে দেওয়া হচ্ছে ক্ষুধার্তদের থালায়।

ওই কিশোর-কিশোরীরা জানান, ইয়াসের ধাক্কায় তাঁদের ঘরেও জল ঢুকেছিল। কিন্তু বিপর্যয়ের সময়ে কেবল নিজেদের কথা ভাবলেই চলে না। সকলের কথা ভেবে তারা কাজ শুরু করেছে। সপ্তম শ্রেণির তিস্তা দাস, দশম শ্রেণির দিয়া দেব, ষষ্ট শ্রেণির সোহিনী পরামানিক বলেন, ‘‘আমরা সকলে চাঁদা তুলে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি।এই কাজের সুযোগ পেয়ে আপ্লুত।’’

ওই নাট্যশিক্ষা কেন্দ্রের পক্ষে তপন দেব, সুব্রত পাল ও শঙ্কর দাস জানান, প্রায় প্রত্যেক বছর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকা। মানুষকে ভুগতে হয়। প্লাবিত এলাকার মানুষের পাশে বড়দের মতো শিশুরাও এসে দাঁড়িয়েছে। বিপদের দিনে জোটবদ্ধ থাকার বার্তা দিচ্ছে খুদেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন