বাঁ দিকে, মায়ের আদরে মাখামাখি দিশা। ডান দিকে, রাতুল ও সৌরজ্যোতি। নিজস্ব চিত্র।
মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় জোড়া সাফল্যের মুখ দেখল কাকদ্বীপ।
একই স্কুলের দুই বন্ধু এ বার যুগ্ম পঞ্চম এবং যুগ্ম নবম হয়েছে কাকদ্বীপ সুন্দরবন আদর্শ বিদ্যালয় থেকে। উচ্ছ্বসিত শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
দুই কৃতী হল, সৌরজ্যোতি মাইতি ও রাতুল মালি। সৌরজ্যোতি ৬৭৯ নম্বর পেয়ে পঞ্চম হয়েছে। রাতুল ৬৭৫ পেয়ে হয়েছে নবম। সৌরজ্যোতি ডাক্তার তো অন্য জন ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্নে বিভোর। কলকাতার স্কুলে পড়তে চায় দু’জনেই।
পড়াশোনার পাশাপাশি অভিনয়, আবৃত্তিতেও বেশ দড় সৌরজ্যোতি। বাবা ওই স্কুলেরই শিক্ষক। মা ইংরেজি পড়াতেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি আব্দুল কালামের আদর্শে নিজের জীবন গড়তে চায় ছেলেটি। রাতুলের মা স্কুলের শিক্ষিকা, বাবা ব্যাঙ্ককর্মী। পড়াশোনার বাইরে গল্পের বই পড়াটা বড় নেশা রাতুলের।
গর্বিত প্রধান শিক্ষক শ্যামসুন্দর জানা বলেন, ‘‘এ রকম ছাত্র গত এক দশকে আমরা পাইনি।’’ তবে একটা আক্ষেপ থেকেই যাচ্ছে, মেধাবী ছেলে দু’টি অন্য স্কুলে পড়়তে চলে যাবে শুনে। শ্যামসুন্দরবাবুর কথায়, ‘‘আমাদের এমনিতে একটু একটু করে পরিকাঠামো এগোচ্ছে। কিন্তু স্কুল বাড়ি প্রায় ৫০ বছরের পুরনো। সংস্কার দরকার। ল্যাবে ভাল কিছু যন্ত্রপাতি প্রয়োজন। তবে শিক্ষকদের ছাত্রদের প্রতি আরও মনোযোগ দিয়ে দেখা দরকার, কার কী সমস্যা।’’
অন্য দিকে, উত্তেজনায় সারা রাত চোখের পাতা এক করতে পারেনি মেয়েটি। ভোর হতেই টিভির পর্দায় মাধ্যমিকের ফলের অপেক্ষায় বার বার তাকিয়েছে উত্তর হাবরার বাসিন্দা মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী দিশা হোড়।
অবশেষে, অপেক্ষার পালা শেষ।
টিভিতে তখন প্রথম থেকে দশ জনের নাম ঘোষণা হচ্ছে। নবম স্থানে নিজের নাম শুনেই অবাক দিশা। নাম ঘোষণার পর প্রথমে বিশ্বাসই হচ্ছিল না বলে জানায় মেয়েটি। এরপরেই খুশির জোয়ার আছড়ে পড়ল বাড়িতে।
হাবরার কামিনীকুমার গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী দিশা এ বারের মাধ্যমিকে পেয়েছে ৬৭৫ নম্বর। রাজ্যের আর ১৫ জন পরীক্ষার্থীর সঙ্গে সে যুগ্ম ভাবে নবম স্থানে মেধা তালিকায়। গোটা উত্তর ২৪ পরগনা জেলাতে দিশা প্রথম হয়েছে। ইচ্ছে আছে অঙ্কের শিক্ষক হবে। বাবা দুলালবাবু বলেন, ‘‘একটিই সন্তান। ওই আমাদের আশা-ভরসা। তবে এতটা ভাল ফল করবে ভাবতে পারিনি।’’ জলভরা চোখ নিয়ে মা বলেন, ‘‘আজ মনে হচ্ছে পরিশ্রম সফল হয়েছে।’’