সৎকারের জন্য জমি অমিল, মর্গে জমছে বেওয়ারিশ লাশ

জমছে শুধু লাশের পর লাশ। কিন্তু সৎকারের কোনও জায়গা নাই। কাকদ্বীপের পুলিশ মর্গটির অবস্থা এমনই।সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, সরকারের চিহ্নিত করা নিরাপদ জায়গাতেই দেহগুলি সৎকার করা হয়। ডায়মন্ড হারবারে এই জায়গা রয়েছে। কিন্তু কাকদ্বীপে এখনও তা নেই।

Advertisement

শান্তশ্রী মজুমদার

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৬ ০৬:৪১
Share:

কাকদ্বীপ পুলিশ মর্গ। নিজস্ব চিত্র।

জমছে শুধু লাশের পর লাশ। কিন্তু সৎকারের কোনও জায়গা নাই। কাকদ্বীপের পুলিশ মর্গটির অবস্থা এমনই।

Advertisement

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, সরকারের চিহ্নিত করা নিরাপদ জায়গাতেই দেহগুলি সৎকার করা হয়। ডায়মন্ড হারবারে এই জায়গা রয়েছে। কিন্তু কাকদ্বীপে এখনও তা নেই। ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। একটা ব্যবস্থা নিশ্চয় করা হবে।’’

ভোটের প্রায় মাস খানেক আগেই তড়িঘড়ি চালু করে দেওয়া হয়েছিল কাকদ্বীপ মর্গ। তারপরেই ডায়মন্ড হারবার মর্গের মেরামতির কাজ শুরু হয়েছিল। ফলে তখন ডায়মন্ড হারবারের সমস্ত বেওয়ারিশ লাশ পাঠানো হয়েছিল কাকদ্বীপ মর্গে। ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলার মূল মর্গ হয়ে উঠেছিল কাকদ্বীপের এই মর্গটি।

Advertisement

কাকদ্বীপ এবং ডায়মন্ড হারবার দুই মহকুমায় যত বেওয়ারিশ লাশ উদ্ধার হচ্ছিল সেগুলির ঠিকানা এখন কাকদ্বীপ মর্গ। প্রায় দেড়মাস হল ডায়মন্ড হারবার মর্গটি ফের চালু হয়েছে। কিন্তু কাকদ্বীপে জমে গিয়েছে দেহ। শুধুমাত্র নিরাপদ জায়গা না থাকার জন্য দীর্ঘদিন ধরে সেগুলি সৎকার করা যাচ্ছে না।

হাসপাতালের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক জানান, কাকদ্বীপ মর্গে ড্রয়ার রয়েছে মাত্র চারটি। তাতে চারটি দেহ রাখার কথা। কিন্তু গত তিন মাসে জমা হয়েছে, ২৬টি দেহ। হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘একটি করে ড্রয়ারে ৫টি করে দেহ গুঁজে রাখতে হচ্ছে। এরকম বেশিদিন চললে সমস্যা হতে পারে।’’ এর জন্য শীততাপ নিয়ন্ত্রণের মেশিন টানা তিন মাস ধরে চলছে। তা খারাপ হয়ে যেতে পারে। বিদ্যুতের অনেক বিলও আসবে বলে তাঁর দাবি। ড্রয়ারে জায়গা নেই বলে এখন কয়েকটি দেহ মর্গের মেঝেতেই রাখা হয়েছে। এ ভাবে চলতে থাকলে এরপরে দুর্গন্ধ ছড়াবে। দূষিত হবে পরিবেশ।

প্রশাসনের তরফে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না?

এ ব্যাপারে মহকুমাশাসক রাহুল নাথ বলেন, ‘‘বিষয়টি প্রশাসনের নজরে রয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ পুলিশের তরফে বেওয়ারিশ দেহ ৭ দিন মর্গে রাখার কথা বলা হয়। তারপর সেগুলি বের করার অনুমতি মেলে। প্রক্রিয়াকরণে যায় আরও কয়েকদিন। তারপর সৎকার করে দেওয়াই উচিত। কিন্তু কাকদ্বীপ মর্গে তা হচ্ছে না।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কাকদ্বীপে কোনও জায়গা তৈরি হয়নি বলে দেহগুলি ডায়মন্ড হারবারে এনে দাহ করতে হয়। এই সব বেওয়ারিশ লাশের ক্ষেত্রে প্রথমে দেখতে হয় যে এদের কোনও ফরেন্সিক পরীক্ষা চলছে কিনা। এই সমস্ত নিয়ম মিটে গেলেই দেহগুলি দাহ করে দেওয়া হয়।

মহকুমা প্রশাসন সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ভোটের জন্য কাকদ্বীপে দেহ সৎকারের জন্য কোনও নিরাপদ জায়গা তৈরি করা যায়নি। ভোট পেরিয়ে গিয়েছে, এ বার সেই ব্যবস্থা করা হবে। তা না হলে বারে বারে দেহ ডায়মন্ড হারবারে পাঠানোর ব্যবস্থা করাটা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন