কর্মহীন: ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে এসএনসিইউ। ছবি: দিলীপ নস্কর
ক’দিন আগে আমিনা বিবি হাসপাতালে সন্তান প্রসব করার পরে দেখা যায়, নবজাতকের ওজন কম। শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছে। অসুস্থ শিশুটিকে এসএনসিইউ-তে রেখে চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল। তবে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে চিকিৎসকের অভাবে পরিষেবা কেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় মরণাপন্ন শিশুটিকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিয়ে যেতে হয় কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে।
শুধু ওই শিশুর ক্ষেত্রে নয়, জরুরি পরিষেবা কেন্দ্রটি দু’মাস ধরে বন্ধ থাকায় অসুস্থ বহু নবজাতকের পরিবারকে হয়রান হতে হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশু মৃত্যু বন্ধ করতে এবং পরিষেবা বাড়াতে ২০১২ সালে হাসপাতালের একটি হল ঘরে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ২০ শয্যার ২৪ ঘণ্টা পরিষেবা দেওয়ার জন্য একটি নবজাতক পরিষেবা কেন্দ্র (এসএনসিইউ) চালু হয়। সব সময়ে ৪ জন শিশু বিশেষজ্ঞ থাকতেন। সদ্যোজাত শিশুর ওজন কম হলে, জন্ডিস ধরা পড়লে বা শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলে সেখানে রেখে চিকিৎসা চলত। নবজাতক থেকে ২৮ দিনের শিশু পরিষেবার ব্যবস্থা ছিল। ২০টি বেড থাকলেও রোগীর চাপের জন্য ২৪টি বেডে শিশু রাখা হত। শিশুদের বেডের পাশে রয়েছে সদ্যোজাত মায়ের থাকার ব্যবস্থাও।
মাস দু’য়েক আগে ওই কেন্দ্রে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা চালু করার কাজ শুরু হয়। সে সময়ে ওই ইউনিটের দায়িত্বে থাকা চার চিকিৎসক উচ্চশিক্ষার জন্য চলে যান। তারপর থেকেই শুরু হয় সমস্যা। মাস দেড়েক আগে শিশু পরিষেবা কেন্দ্রের জন্য স্বাস্থ্যভবন থেকে নতুন ৪ জন শিশু বিশেষজ্ঞকে পাঠালেও তাঁরা কেউ শেষমেশ কাজে যোগ দেননি।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অন্যতম পরিষেবা কেন্দ্র বলতে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতাল। খাতায় কলমে বেডের সংখ্যা ৩০০ হলেও পাঁচশোরও বেশি রোগী ভর্তি থাকেন। এই হাসপাতালের উপরে নির্ভরশীল ডায়মন্ড হারবার মহকুমা ছাড়াও কাকদ্বীপ, বারুইপুর ও আলিপুর মহকুমার বহু মানুষ। এসএনসিইউ বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছেন অসংখ্য মানুষ।
জেলা হাসপাতালের সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘উচ্চশিক্ষার জন্য চারজন চিকিৎসক চলে যাওয়ার পরে শিশু পরিষেবা কেন্দ্রের জন্য স্বাস্থ্য ভবন ফের চারজনকে পাঠিয়েছিল। কিন্তু তাঁরা কেউ কাজে যোগ দেননি। ফলে ওই ইউনিটটি প্রায় ২ মাস বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ভবনে একাধিকবার জানানো হলেও। এখনও সমস্যার সুরাহা হয়নি।’’