একমাত্র শিক্ষক না এলেই বন্ধ হয়ে যায় পড়াশোনা

ঝাঁ চকচকে ভবনগুলিতে কচিকাঁচা পড়ুয়াদের ভিড় রয়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় শিক্ষক নেই।দীর্ঘদিন প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগ না হওয়ায় এক জন, দু’জন শিক্ষক দিয়ে জেলা জুড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন চলছে। আর ৫০-১০০ জন পড়ুয়াদের নিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন শিক্ষকেরা।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৬ ০২:৪৬
Share:

আছে শুধু সাজানো গোছানো ভবন। নিজস্ব চিত্র।

ঝাঁ চকচকে ভবনগুলিতে কচিকাঁচা পড়ুয়াদের ভিড় রয়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় শিক্ষক নেই।

Advertisement

দীর্ঘদিন প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগ না হওয়ায় এক জন, দু’জন শিক্ষক দিয়ে জেলা জুড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন চলছে। আর ৫০-১০০ জন পড়ুয়াদের নিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন শিক্ষকেরা।

জেলা শিক্ষা দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই জেলায় আলিপুর, বারুইপুর, ডায়মন্ড হারবার, ক্যানিং ও কাকদ্বীপ মহকুমায় ৫১টি এসআই অফিস রয়েছে। তার অধীনে ৩৭ হাজার ৬৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৪ লক্ষ ১৫ হাজার ৬২৮ জন। শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছেন মাত্র ১১ হাজার ১৬২ জন। শিক্ষক কম হওয়ায় পড়াশোনা কোনও রকমে চলে স্কুলগুলির। মথুরাপুর ২ ব্লকের দক্ষিণ চক্রের অধীনে রয়েছে ৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এরমধ্যে ৭টি স্কুলে বছরের পর বছর এক জন শিক্ষক দিয়েই পঠনপাঠন চালানো হয়। গিলের ছাট পঞ্চায়েতে গোলাবাড়ি বৈরাগীর চক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী সংখ্যা প্রায় ৭০ জন। সেখানেও এক জন শিক্ষক। কোনও কারণে যদি তিনি স্কুলে না আসেন, তা হলে পড়াশোনা শিকেয় ওঠে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক গৌতম প্রামাণিক বলেন, ‘‘প্রায় এক বছর ধরে একাই স্কুল চালাচ্ছি। স্কুলে না আসতে পারলে শিক্ষা বন্ধুকে বলে কোনও ভাবে স্কুল চালানোর চেষ্টা করি।’’ এ ভাবে চলার জন্যই দিনে দিনে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কমছে বলে তিনি জানান।

Advertisement

একই হাল কাশীনগর পঞ্চায়েতে কাশীনগর বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। এখন ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১০০ জন। কিন্তু সবেধন নীলমনি একজন মাত্র শিক্ষক। ওই শিক্ষকের বাড়ি আবার পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে। তিনি অনুপস্থিত থাকলে পঠনপাঠনও বন্ধ থাকে। স্কুলটি একেবারে যাতে বন্ধ না থাকে সে জন্য পাশের স্কুলের পিন্টু পুরকাইত নামে এক শিক্ষককে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এলাকার অভিভাবকেরা জানালেন, এ ভাবে কী পঠন পাঠন চলে! এর জন্য অনেকেই প্রাইভেট স্কুলে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করাচ্ছে। কিন্তু যাঁদের টাকা নেই তাঁরা বাধ্য হয়ে এই স্কুলগুলিতেই পড়ছে।

শুধু মথুরাপুর ২ ব্লকের ওই চিত্র নয় ডায়মন্ড হারবার, ফলতা, মগরাহাট, কুলপি-সহ অন্য জায়গারও ওই একই অবস্থা। অভিভাবকদের মতে, স্কুলছুট কমাতে সরকার জুতো-জামা-প্যান্ট, এমনকী, সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের আর্থিক সাহায্যও করছে। পাশাপাশি শিক্ষক নিয়োগ ব্যবস্থার দিকেও নজর দেওয়া উচিত।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) উদয়ন ভৌমিক বলেন, ‘‘আইনি জটিলতার কারণে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলে স্কুলগুলিতে শিক্ষক পাঠানোর ব্যবস্থা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন