Kultoli

সদ্যোজাতকে স্তন্যপান করালেন চিকিৎসক

কোভিড পরিস্থিতিতে মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটছাঁট করেই দিনকয়েক আগে কাজে ফেরেন। যোগ দেন কুলতলির জামতলা গ্রামীণ হাসপাতালে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কুলতলি শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:২০
Share:

মাতৃস্নেহ: সদ্যোজাতকে কোলে নিয়ে চিকিৎসক। নিজস্ব চিত্র

রোজকার মতো প্রসূতি বিভাগে রাউন্ড দিচ্ছিলেন কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসক। তখন অনবরত কেঁদে চলেছে কয়েকজন সদ্যোজাত। পরীক্ষা করে চিকিৎসক বোঝেন, সদ্য মা হওয়া ওই মহিলাদের স্তন্যদুগ্ধ উৎপাদনে সমস্যা হচ্ছে। ফলে খেতে না পেয়ে কাঁদছে বাচ্চাগুলো। মহিলা চিকিৎসকও সদ্য মা হয়েছেন। বাচ্চাগুলির কান্না থামাতে তাই আর দেরি করেননি। দ্রুত পরপর তিনটি বাচ্চাকে নিজের স্তন্যদুগ্ধ পান করিয়ে শান্ত করেন তিনি। ন’মাস আগে মা হন ওই চিকিৎসক চিত্রলেখা সর্দার। কোভিড পরিস্থিতিতে মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটছাঁট করেই দিনকয়েক আগে কাজে ফেরেন। যোগ দেন কুলতলির জামতলা গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানেই বুধবার সকালে ঘটে এই ঘটনা। করোনা পরিস্থিতির জন্য নিজের সদ্যোজাত শিশুকে সঙ্গে আনেননি তিনি। চম্পাহাটিতে চিত্রলেখার বাবা-মায়ের কাছে রয়েছে সে। চিত্রলেখা জানান, দূরে থাকায় নিজের শিশুকে স্তন্যদুগ্ধ খাওয়াতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে সেই দুধ নষ্ট করে ফেলতে হচ্ছে তাঁকে। এ দিন যখন দেখলেন, কয়েকটি বাচ্চা দুধ না পেয়ে কাঁদছে, তখন আর দূরে সরে থাকতে পারেননি তিনি। চিত্রলেখার কথায়, “দুধ না পেয়ে বাচ্চাগুলোকে ও ভাবে কাঁদতে দেখেই দ্রুত ঠিক করে ফেলি আমিই ওদের দুধ খাওয়াবো। খাওয়ার পর বাচ্চাগুলোকে শান্তিতে ঘুমোতে দেখে কী যে তৃপ্তি পেয়েছি!” চিকিৎসক এই ভাবে পাশে দাঁড়ানোয় খুশি হাসপাতালে ভর্তি সদ্য মায়েরা। তাঁদেরই একজন বলেন, “প্রথমবার মা হলাম। বাচ্চা কেন কাঁদছে বুঝতে পারছিলাম না। নিজের কী সমস্যা হচ্ছে, সেটাও জানতাম না। ডাক্তার দিদি এইভাবে সাহায্য করবেন ভাবতে পারিনি।” চিত্রলেখা বলেন, “চিকিৎসক হিসেবে কর্তব্য পালন করতে গিয়ে নিজের বাচ্চার কাছে থাকতে পারছি না। কিন্তু আমি তো একজন মা। তাই যে কোনও শিশুর প্রয়োজনে আবার এই কাজ করতে হলে করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন