আশা: এখান থেকে লো-ভোল্টেজের সমস্যা কাটবে বলে মনে করছেন সরকারি আধিকারিকেরা। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে অবশেষে সুভাষগ্রামে জমি-জট কাটিয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে সূচনা হল বিদ্যুতের সাব স্টেশনের। সুভাষগ্রাম থেকে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত সোনাখালিতে পৌঁছে যাবে বিদ্যুতের ১৩২ কেভি লাইন। বিদ্যুতের এই লাইন যাওয়ার ফলে ক্যানিং ১ ও ২, বাসন্তী, গোসাবা ব্লকের মানুষ উপকৃত হবেন। লো-ভোল্টেজের সমস্যা থাকবে না বলে মনে করা হচ্ছে। সাব স্টেশন থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
সোমবার বিকেলে সুভাষগ্রামে সাব স্টেশনের পরীক্ষামূলক সূচনা করেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে খুব শীঘ্রই সরকারি ভাবে ওই সাব স্টেশনের উদ্বোধন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এ দিন জেলাশাসক ছাড়াও পরীক্ষামূলক সূচনা-পর্বে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিদ্যুৎ সংবহন সংস্থার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর কমলেশ মাইতি-সহ অনেকে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘জমি-জটের জন্য সুভাষগ্রামে বিদ্যুতের সাব স্টেশনের কাজ শেষ করা যাচ্ছিল না। আমরা সকলের সঙ্গে বসে সমাধান করি।’’
২০১৫ সালে এই সাব স্টেশনের কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও মাদারহাট, হাড়দা, বেগমপুর, রামচন্দ্রখালি-সহ বিভিন্ন জায়গায় জমি-জটের কারণে সেই কাজ থমকে যায়। নির্ধারিত সময়ে অর্ধেক কাজও এগোয়নি।
এ বছর ২৮ মার্চ পৈলানে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেন। গত ছ’মাসের মধ্যে জেলাশাসক রত্নাকর রাও বিদ্যুৎ দফতরের কর্তা ও জন প্রতিনিধিদের উদ্যোগে জমি-জট কাটিয়ে সাব স্টেশনের কাজ শেষ করা হয়েছে বলে প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে।
প্রায় ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাব স্টেশনটি তৈরি হয়েছে। সুভাষগ্রাম থেকে সোনাখালি পর্যন্ত প্রায় ৪১.২ কিমি বিদ্যুতের লাইন নিয়ে যাওয়ার জন্য ১৬৬টি টাওয়ার বসানো হয়েছে। টাওয়ার বসানো থেকে বিদ্যুতের তার নিয়ে যাওয়া হয়েছে ব্যাক্তি মালিকানার সম্পত্তির উপর দিয়ে। প্রথম দিকে কিছু লোকজন টাওয়ার বসানো ও তার নিয়ে যাওয়ার কাজে বাধা দেওয়ায় কাজ থমকে যায়। পরবর্তী সময়ে জমি মালিক ও চাষিদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বরফ গলতে থাকে।
সরকারি গীতাঞ্জলি প্রকল্প, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে কাউকে কাউকে ঘর দেওয়া হয়, কারও মাটির ভাঙাচোরা বাড়ির পরিবর্তে পাকা ঘর করে দেওয়া হয়। সরকারি নানা প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা পেতে থাকেন ওই সব এলাকার মানুষজন। ৮০০ পরিবারকে প্রায় ৩ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে জমি-জটের সমস্যার সমাধান করা হয় বলে প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর। রাজ্য বিদ্যুৎ সংবহন সংস্থা ও রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে জমি-জটে ও আন্দোলনে সোনারপুর, জোকা ও কসবা এলাকায় বিদ্যুতের সাব স্টেশনের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে সুভাষগ্রামের বিদ্যুতের সাব স্টেশন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।